কাঁচা আমের নানান গুন: আমের জন্মস্থান নিয়ে রয়েছে নানা তর্ক-বিতর্ক। বৈজ্ঞানিক ‘ম্যাঙ্গিফেরা ইন্ডিকা’ নামের এ ফল ভারতীয় অঞ্চলের কোথায় প্রথম দেখা গেছে, তা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও আমাদের এ জনপদেই যে আমের আদিবাস— এ সম্পর্কে আম বিজ্ঞানীরা একমত। ইতিহাস থেকে জানা যায়, খ্রিস্টপূর্ব ৩২৭-এ আলেকজান্ডার সিন্ধু উপত্যকায় আম দেখে ও খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। এ সময়ই আম ছড়িয়ে পড়ে মালয় উপদ্বীপ, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ ও মাদাগাস্কারে।
[ কাঁচা আমের নানান গুন | কাঁচা আম ]
জানা যায়, মোগল সম্রাট আকবর ভারতের শাহবাগের দাঁড়ভাঙায় এক লাখ আমের চারা রোপণ করে উপমহাদেশে প্রথম একটি উন্নত জাতের আম বাগান সৃষ্টি করেন। আমের আছে বাহারি নাম বর্ণ, গন্ধ ও স্বাদ। ফজলি, আশ্বিনা, ল্যাংড়া, ক্ষীরশাপাতি, গোপালভোগ, মোহনভোগ, জিলাপিভোগ, লক্ষণভোগ, মিছরিভোগ, বোম্বাই ক্ষীরভোগ, বৃন্দাবনী, চন্দনী, হাজিডাঙ্গ, সিঁদুরা, গিরিয়াধারী, বউভুলানী, জামাইপছন্দ, বাদশভোগ, রানীভোগ, দুধসর, মিছরিকান্ত, বাতাসা, মধুচুসকি, রাজভোগ, মেহেরসাগর, কালীভোগ, সুন্দরী, গোলাপবাস, পানবোঁটা, দেলসাদ, কালপাহাড়সহ চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাওয়া যায় প্রায় ৩০০ জাতের আম। তবে অনেকগুলো এখন বিলুপ্তপ্রায়।
আম আমরা সবাই খেতে পছন্দ করি। করব নাই বা কেন ? কাঁচা হোক বা পাকা দুই ধরনের আমই আমাদের শরীরের জন্য উপকারী । গরমে কাঁচা আমের শরবত যেন আমাদের সবার মনে প্রানে শান্তি এনে দেয়। কাঁচা আমের মধ্যে আছে পটাশিয়াম যার কারনে প্রচণ্ড গরমেও তা আমাদের শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে । জেনে রাখুন কাঁচা আম খাওয়া উপকারিতা।

চুল ও ত্বক উজ্জ্বল করে: কাঁচা-আমে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকার কারণে তা চুল ও ত্বককে উজ্জ্বল রাখতে সাহায্য করে। গ্রীষ্মে তাই চুল ও ত্বক সুন্দর রাখতে কাঁচা-আম খেতে পারেন।

ভিটামিন সি: কাঁচা-আমে আছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন ‘সি’। দাঁত, চুল, নখ ভালো রাখার জন্য ভিটামিন ‘সি’ জরুরি। স্কার্ভি ও মাড়ির রক্ত পড়া কমায় কাঁচা আম। নিশ্বাসের দুর্গন্ধ ও দাঁতের ক্ষয় রোধেও সহায়তা করে মৌসুমী ফল কাঁচা আম। এ ছাড়া ভিটামিন ‘সি’ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শরীরের ক্যালসিয়ামের প্রয়োজনীয়তা পূরণে সাহায্য করে, ফলে হাড় হয় শক্তিশালী। ভিটামিন ‘সি’ নতুন রক্ত কণিকা সৃষ্টিতে সাহায্য করে, আয়রনের শোষণে এবং রক্তপাতের প্রবণতা প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে।
ঘামাচি প্রতিরোধ করে: গ্রীষ্মে সবচেয়ে অস্বস্তিকর ব্যাপার হলো ঘামাচি। কাঁচা-আমের পুষ্টি উপাদান ঘামাচির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। কাঁচা আমে এমন কিছু উপাদান রয়েছে, যা সানস্ট্রোক হতে বাধা দেয়।
পেটে গ্যাসের সমস্যা, অম্লতা দূর করে: অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য অনেকেই পেটে গ্যাসের সমস্যা, বুক জ্বালাপোড়া বা অম্লতার সমস্যায় ভুগে থাকেন। কাঁচা-আমে গ্যালিক অ্যাসিড থাকার কারণে তা হজম প্রক্রিয়াকে গতিশীল করে। অম্লতা কমাতে কাঁচা আমের এক টুকরা মুখে দিতে পারেন।
যকৃতের সমস্যা দূর করে: কাঁচা-আম খাওয়ার পর পিত্তথলির এসিড ও পিত্ত রস বৃদ্ধি পাওয়ার কারেণ যকৃতের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণও দূর হয়। তাই যকৃতের রোগ নিরাময়ের প্রাকৃতিক বন্ধু হতে পারে কাঁচা-আম।
ওজন কমাতে বা শরীরের বাড়তি ক্যালরি খরচ করতে কাঁচা-আম বেশ উপকারী
ঘাম কমায়, শরীর ঠাণ্ডা রাখে: কাঁচা আমে পটাশিয়াম থাকে, এটি শরীর ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে। কাঁচা আমের শরবত খেয়ে ঘামের মাত্রা কমানো সম্ভব। শরীরে অতিরিক্ত ঘামের ফলে সোডিয়াম ক্লোরাইড এবং আয়রন কমতে শুরু করে। যা প্রতিরোধ করে কাঁচা-আম।
শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে: ওজন কমাতে বা শরীরের বাড়তি ক্যালরি খরচ করতে কাঁচা আম বেশ উপকারী। কারণ, পাকা আমের চেয়ে কাঁচা-আমে চিনি কম থাকে বলে এটি দেহে খুব কম ক্যালরি সরবরাহ করে থাকে। পাশাপাশি শরীরে জমে থাকা অতিরিক্ত ক্যালরি পুড়াতেও সাহায্য করে।
আরও দেখুনঃ
- ন্যানোপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মাসে ১০০ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণের প্রত্যাশা সওজের
- প্রধানমন্ত্রী: আওয়ামী লীগ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে চায়
- নারীরা হয়ে উঠছেন উদ্যোক্তা সরকারের সহায়তায়
- প্রধানমন্ত্রী: আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে
- যে কারণে পদ্মা সেতুকে ‘দ্য লোয়েস্ট কস্ট ব্রিজ’ বলছেন বিশ্বসেরা প্রকৌশলীরা