ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে রেল চলাচল শুরু হবে আগামীকাল ১০ অক্টোবর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই নতুন রেলপথের উদ্বোধন করবেন।ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৌঁছে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেবেন কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায়। আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, এই জনসভা থেকে প্রধানমন্ত্রী আগামী সংসদ নির্বাচন নিয়ে নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ মঙ্গলবার চালু হচ্ছে। এরপর এমাসেই বাণিজ্যিকভাবে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন চালু হওয়ার কথা রয়েছে। আর ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০২৪ সালের জুন। ঢাকা-যশোর রেলপথ পুরোপুরি চালু হলে রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি রেল নেটওয়ার্কে আসবে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলা।
পদ্মা সেতু হয়ে রেল চলাচল উদ্বোধন মঙ্গলবার
রেল সূত্রে জানা গেছে, শুরুতে একটি ট্রেন পরিচালনা করা হবে। পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্পের পক্ষ থেকে শুরুতে ঢাকা-রাজবাড়ী রুটে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজশাহী থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত চলাচলকারী মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকা পর্যন্ত আনারও পরিকল্পনা রয়েছে। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীনে চীন থেকে ১০০ নতুন কোচও কেনা হয়েছে। নতুন কোচ দিয়েই পদ্মাকেন্দ্রিক ট্রেনগুলো পরিচালনা করা হবে।
পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পে কমলাপুর (ঢাকা) থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন থাকবে, এর মধ্যে ১৪টি স্টেশনই নতুন। পুরোনো ছয়টি স্টেশনকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। কেরানীগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জের নিমতলা, শ্রীনগর ও মাওয়া স্টেশনের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ পর্যায় রয়েছে। মাওয়া স্টেশনের পরে পদ্মা সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরায় নির্মিত হচ্ছে ‘পদ্মা স্টেশন’। পদ্মা স্টেশনের পরে শরীয়তপুরে ‘শিবচর স্টেশন’। এ ছাড়া ফরিদপুরের ভাঙ্গায় উন্নত দেশের আদলে নির্মাণ করা হচ্ছে জংশন। ভাঙ্গা থেকে একটি লুপ লাইন ফরিদপুর সদর ও অন্য একটি লুপ লাইন নাগরকান্দা পর্যন্ত যাবে।
প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি প্রায় ৮৫ শতাংশ। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আফজাল হোসেন জানান, এই প্রকল্পটি ২০১৬ সালের ৩ মে অনুমোদন করা হয়। শুরুতে নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিলো প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করা হয়, ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১৯ সালে।
এই রেলপথ নির্মাণ করা হচ্ছে চীনের অর্থায়নে, সরকারের সঙ্গে সরকারের (জিটুজি) চুক্তির ভিত্তিতে। প্রকল্পের কাজ করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি)। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দিচ্ছে ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। বাকি অর্থ ব্যয় হচ্ছে সরকারি কোষাগার থেকে।
আরও দেখুনঃ