নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির সমঝোতা! ২৫ বছরের জন্য নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে নেপাল- ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে একটি সমঝোতা হয়েছে বলে নেপালের ইংরেজি দৈনিক কাঠমান্ডু পোস্টের একটি রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। পত্রিকাটি নেপাল ইলেকট্রিসিটি অথরিরিটির সূত্র দিয়ে এই খবর গতকাল প্রকাশ করেছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ বিভাগের সিনিয়র সচিব হাবিবুর রহমানের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সংবাদটি আমিও দেখেছি। কিন্তু নেপালের সঙ্গে আমাদের বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়টি এখনো আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে। তাদের একটি প্রতিনিধি দল মাস দুয়েক আগে আমাদের এখানে এসেছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাছাড়া এটি শুধু নেপালের সঙ্গে আলোচনার বিষয় নয়; বিদ্যুৎ সঞ্চালনের জন্য ভারতের সঙ্গেও আলোচনা করতে হবে। সুতরাং বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে যদি সমঝোতা হয় তবে তিন দেশিয় সমাঝোতা হবে। এখনো এসব বিষয় আলোচনার পর্যায়েই রয়েছে।
নেপাল থেকে ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির সমঝোতা!
তিনি বলেন, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ আমদানি অপেক্ষাকৃত সস্তাই হবে। আমরা ভারত থেকে সাড়ে ৭ টাকা থেকে ৮ টাকা ইউনিট মূল্যে বিদ্যুৎ আমদানি করি। এই বিদ্যুৎ কয়লা থেকে উৎপাদন হয়। কিন্তু নেপাল থেকে যে বিদ্যুৎ আমদানির কথা হচ্ছে তা হচ্ছে জল বিদ্যুৎ । তার মূল্য কম হবে। দেশে কয়লা থেকে উৎপাদিত প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের মূল্য ১৬ টাকা।
কাঠমান্ডু পোস্টের রিপোর্টে বলা হয়, নেপাল থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসবে ভারতের সঞ্চালন লাইন দিয়ে। এটি ভারতের বহরামপুর সঞ্চালন লাইন দিয়ে বাংলাদেশের ভেড়ামারায় জাতীয় গ্রিডে প্রবেশ করবে। বাংলাদেশের পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ড নেপালের ইলেকট্রিসিটি অথরিটি ও ভারতের বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের সঙ্গে গত মে মাসে বিদ্যুতের মূল্য ও ট্রান্সমিশন ফি নিয়ে এ বিষয়ে সমাঝোতা হয়েছে।
উল্লেখ্য, নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্প কমল প্রচণ্ড গত জুলাই মাসে ভারত সফরে যান। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেন, নেপালের বিদ্যুৎ ভারতের ভেতর দিয়ে বাংলাদেশে রপ্তানি করতে ভারতের সঞ্চালন লাইন ব্যবহারের অনুমতি দিতে। ভারতের সংবাদ মাধ্যমের দাবি নরেন্দ্র মোদী এই বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সিপিডি আয়োজিত এক সেমিনারে দাবি করেছিলেন, নেপাল থেকে বিদ্যুৎ যেমন আমদানি করা হবে তেমনি নেপালে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ রপ্তানিও করবে। তিনি বলেন, নেপালে শীতকালে বিদ্যুৎ ঘাটতি হয় সেই সময় বাংলাদেশে আবার বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে। তখন বাংলাদেশের বাড়তি বিদ্যুৎ রপ্তানি করা যাবে। তিনি বলেন, নেপাল ছাড়াও বাংলাদেশ ভ’টানের সঙ্গেও বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়ে আলোচনা করছে। ভুটানে বাংলাদেশ নিজেই বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে বলে তিনি সেমিনারে জানিয়েছিলেন।
বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশের ৪১ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন হবে। এই বিদ্যুতের ১৬ শতাংশ বাংলাদেশ আমদানি করবে। ৩৫ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস দিয়ে ও ৩৫ শতাংশ কয়লাদিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। ১২ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে পারমানবিক ও অন্যান্য গ্রিন এনার্জি খাত থেকে।
আরও দেখুনঃ