বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাপক ঝুঁকিতে বিরূপ আবহাওয়ার কারনে । বিশ্বজুড়ে চলছে দীর্ঘস্থায়ী তাপ্রবাহ, খরা, অতিবর্ষণ ও বন্যা। এ কারণে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি উৎপাদন। এ ছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যকার শস্যচুক্তি অকার্যকর ও ভারতের চাল রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা এবং ব্যাপক মুদ্রাস্ফিতি ঝুঁকির মধ্যে থাকা বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তাকে আরও হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। ইতোমধ্যেই গম ও চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি টন চালের দাম গত ১১ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। শস্য চুক্তি থেকে রাশিয়ার সরে যাওয়ার মাত্র ৬ দিনের মধ্যে বিশ্ববাজারে গমের দাম বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। সেইসঙ্গে বাড়তে থাকা মূল্যস্ফীতির জেরে ভোজ্যতেল, মাংস, চিনি, দুধ, ডিম, প্রভৃতি নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য কিনতে হিমসিম খাচ্ছেন বিশ্বের কোটি কোটি সীমিত আয়ের মানুষ।
বিশ্বজুড়ে খাদ্য নিরাপত্তা ব্যাপক ঝুঁকিতে বিরূপ আবহাওয়ার কারনে
যুক্তরাজ্যের সরকারি থিঙ্কট্যাংক সংস্থা চ্যাথাম হাউসের খাদ্য নিরাপত্তা বিভাগের বিশেষজ্ঞ টিম বেনটন মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গকে বলেছেন, ‘খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধির একটি বড় কারণ বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি। এই মুহূর্তে আমরা মূল্যস্ফীতিজনিত ভোগান্তির শিকার।’
চলতি বছর গ্রীষ্মকাল শুরু হতে না হতেই আবহাওয়াগত নানা বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে এশিয়া, ইউরোপ এবং উত্তর আমেরিকার বিস্তীর্ণ অঞ্চল। এ বিপর্যয় ব্যাপকভাবে প্রভাব ফেলছে বৈশ্বিক কৃষি উৎপাদনের ওপর। ইউরোপের অন্যতম বৃহৎ কৃষি নির্ভর দেশ ইতালির কৃষকদের সংগঠন কলদিরেত্তি ব্লুমবার্গকে জানিয়েছে, টানা তাপপ্রবাহ ও খরার কারণে গত বছর দেশটির কৃষিতে ৬৭০ কোটি ডলারের সমপরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
টানা তাপপ্রবাহের কারণে ঝুঁকিতে পড়েছে বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ চাল উৎপাদনকারী দেশ চীনের ধানক্ষেতগুলো। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বছরের প্রথম ছয় মাসে দেশটিতে যে পরিমাণ গম উৎপন্ন হয়েছে— তা গত ৩ দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন।
পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে ধানের উৎপাদন উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় ভারতের অভ্যন্তরেও বেড়েছে চালের দাম। রাজধানী দিল্লির খুচরা বাজারগুলোতে প্রতি কেজি চাল যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তা গত বছরের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বেশি। এছাড়া দেশজুড়ে এই বৃদ্ধির হার গড়ে ৯ শতাংশ। খরার কারণে এশিয়ার অপর বৃহৎ চাল উৎপাদনকারী দেশ থাইল্যান্ডের সরকার দেশটির কৃষকদের দুই মৌসুমের পরিবর্তে এক মৌসুম ধান চাষের পরামর্শ দিয়েছে এবং চীন সরকার কৃষকদের নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ধান কাটার নির্দেশ দিয়েছে। ।
আরও দেখুন: