বস্তিবাসীদের জন্য সরকারের নির্মিত স্বল্প ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট প্রকল্পের ২৩৩টি ফ্লাট বস্তিবাসীদের কাছে খুব শিগগিরই হস্তান্তর করা হবে। পুরো প্রকল্পে ৫টি ভবনে ৫৩৩টি ফ্ল্যাটের মধ্যে ৩শ’ বস্তিবাসী এরই মধ্যে বসবাস শুরু করেছে।
বর্তমানে জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ২৩৩ জন বস্তিবাসীর চুক্তি সম্পন্ন হলেই তারা নব নির্মিত ২টি ভবনে উঠতে পারবে। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছিলেন, ঢাকা ছাড়াও বিভাগীয় ও জেলা শহরেও পর্যায় ক্রমে স্বল্প ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট প্রকল্প নির্মাণ করা হবে।
মিরপুরে বস্তিবাসীদের স্বল্প ভাড়াভিত্তিক ফ্ল্যাট
অন্যদিকে ক্রমহ্রাসমান কৃষি জমির কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রীই বহুতলবিশিষ্ট সমন্বিত সরকারি অফিস ভবন নির্মাণের ধারণা দেন। যাতে জেলা শহরগুলোতে একই ছাদের নিচে দ্রুততম সময়ে সরকারি সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব হয়। বস্তিবাসীদের জন্য ১৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে বহুতল ভবনে ৫৩৩টি আধুনিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকৌশলীরা জানান, শুধু বাংলাদেশে নয়, এই উপমহাদেশেই এটা প্রথম। আগামীতে ভারত উত্তরাখণ্ড ও ঝাড়খণ্ডে এমন আবাসন গড়ে তুলবে।
সরেজমিনে দেখা যায়, প্রতিটি ৬২০ থেকে ৭১৯ বর্গফুট আয়তনের ফ্ল্যাটে রয়েছে দুটি বেডরুম, একটি বারান্দা, একটি ড্রয়িং রুম, বেসিন, রান্নাঘর ও দু’টি বাথরুম। ফ্ল্যাটের দুই পাশে ফাঁকা জায়গা। ফ্ল্যাটগুলো টাইলস করা। একাধিক বসবাসকারি জানান, এ ফ্লাটে মাসিক, সাপ্তাহিক এমনকি দৈনিক স্বল্প ভাড়ায় বাসিন্দারা থাকার সুযোগ পাচ্ছেন। প্রতিটি ফ্ল্যাটের আয়তন ৬৭৩ বর্গফুট। প্রতিদিন কিংবা সপ্তাহ বা মাসে ফ্ল্যাটের ভাড়া পরিশোধ করা যাবে।
প্রতিটি ভবনের নিচতলা বরাদ্দপ্রাপ্তদের সাধারণ ব্যবহারের জন্য উম্মুক্ত রাখা হয়েছে। এ প্রকল্পে সবুজায়ন ও ছোট ছোট শিশু-কিশোরদের খেলাধুলার জন্য ভবনের সামনে ফাঁকা জায়গা রয়েছে। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা জানান, প্রতিটি ভবনে রয়েছে কমিউনিটি হল, দুটি লিফট ও প্রশস্ত সিঁড়ি, অগ্নিনির্বাপণ ও সৌর বিদ্যুতের ব্যবস্থা, ৪০ কেভিএ জেনারেটর ও ২৫০ কেভিএ সাব-স্টেশন, প্রশস্ত ওয়াকওয়ে ও সৌন্দর্যবর্ধনের লাইটিংসহ আধুনিক সুবিধা।
জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের প্রকৌশল ও সমন্বয় উইংয়ের সদস্য কাজী ওয়াসিফ আহমাদ বলেন, যারা এখানে আগে থাকতেন, তাদের জীবন ব্যবস্থা ভালো করার জন্য সরকার এই উদ্যোগ। এখানে আধুনিক অ্যাপার্টমেন্টের মতো সব সুবিধা আছে। এখানে প্রতিটি ভবনে লিফট, জেনারেটর, বিদ্যুতের সাব স্টেশনসহ আধুনিক সব সুবিধা পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী ২০১৭ সালের ২৬ অক্টোবর বস্তিবাসীদের জন্য ভাড়াভিত্তিক আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ করার জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন। সে অনুযায়ী, জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে মিরপুর ১১ নং সেকশনের বাউনিয়া বেড়িবাঁধ এলাকায় ছয় বিঘা জমির ওপর বস্তিবাসীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে।
আরও দেখুনঃ