[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

ভারতের পাকিস্তান ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে হামলা: মূল তথ্য ও বিশ্লেষণ

ভারত ২২ এপ্রিল ২০২৫-এ পাহালগাম, ভারত-শাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের উপর সংঘটিত একটি প্রাণঘাতী জঙ্গি হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান এবং পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে একাধিক হামলা চালিয়েছে। এই হামলায় ২৫ জন ভারতীয় এবং একজন নেপালি নাগরিক নিহত হন। ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এই হামলার নাম দিয়েছে অপারেশন সিন্দুর, যা হামলার দায়ীদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতির অংশ।

পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া

তবে পাকিস্তান এই হামলায় কোনো জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ এই হামলাকে “অযৌক্তিক” এবং “বর্বরোচিত আগ্রাসন” বলে অভিহিত করেছেন এবং প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, পাহালগামের হামলা “পাকিস্তানের সাথে সম্পর্কিত নয়” এবং তার দেশকে “ভুলভাবে অভিযুক্ত” করা হয়েছে।

হামলার প্রভাব (৮ মে ২০২৫ পর্যন্ত)

পক্ষনিহত (প্রাণহানি)আহত
পাকিস্তান৩১৫৭
ভারত১৫৪৩

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দাবি করেছে যে তারা পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান এবং একটি ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করেছে, যদিও ভারত এখনো এই দাবিগুলি নিশ্চিত করেনি।

 

হামলার লক্ষ্যবস্তু

ভারত জানিয়েছে যে তারা পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর এবং পাকিস্তানের নয়টি ভিন্ন স্থানে হামলা চালিয়েছে, যা “সন্ত্রাসী অবকাঠামো” হিসেবে চিহ্নিত। ভারতীয় সামরিক বাহিনী জানিয়েছে যে তাদের এই হামলাগুলি ছিল “নির্দিষ্ট, মাপা এবং উত্তেজনা বাড়ানোর উদ্দেশ্যহীন”।

পাকিস্তান শুরুতে জানিয়েছিল যে হামলাগুলি নিম্নলিখিত স্থানে সংঘটিত হয়েছে:

অবস্থানঅঞ্চল
মুজাফফরাবাদপাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর
কোটলিপাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীর
বাহাওয়ালপুরপাঞ্জাব, পাকিস্তান

পরে, পাকিস্তানের সামরিক মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ বলেন যে মোট ছয়টি স্থানে হামলা চালানো হয়েছে।

 

ভারত কেন এই হামলা চালিয়েছে?

এই হামলার মূল কারণ ছিল ২২ এপ্রিলের পাহালগাম হামলা, যেখানে ২৬ জন নিহত হন, যার মধ্যে বেশ কয়েকজন পর্যটকও ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন যে জঙ্গিরা বিশেষভাবে হিন্দু পুরুষদের লক্ষ্য করেছিল, যা এই অঞ্চলে গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বেসামরিক হামলা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন যে তিনি হামলাকারীদের “পৃথিবীর শেষ প্রান্ত” পর্যন্ত খুঁজবেন এবং যারা এই পরিকল্পনা করেছিল তাদের “কল্পনার বাইরে” শাস্তি দেওয়া হবে। ৭ মে ২০২৫-এ, ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি দাবি করেন যে লস্কর-ই-তৈবা জঙ্গি গোষ্ঠী, যা পাকিস্তানে অবস্থিত, এই হামলার জন্য দায়ী। পাকিস্তান এই দাবি শক্তভাবে অস্বীকার করেছে।

 

কাশ্মীর – একটি চিরস্থায়ী উত্তেজনার কেন্দ্র

কাশ্মীর একটি অত্যন্ত বিতর্কিত অঞ্চল, যা সম্পূর্ণরূপে ভারত এবং পাকিস্তান উভয়েরই দাবি করা হলেও অংশিকভাবে উভয় দেশ কর্তৃক শাসিত। ১৯৪৭ সালে বিভক্তির পর থেকে এই অঞ্চল নিয়ে দুইটি পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

বড় ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা

বছরঘটনাভারতের প্রতিক্রিয়া
২০১৬উরি হামলা (১৯ জন ভারতীয় সেনা নিহত)সীমান্তের ওপারে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক
২০১৯পুলওয়ামা বোমা হামলা (৪০ জন ভারতীয় সেনা নিহত)বালাকোট, পাকিস্তানে বিমান হামলা

আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া

বিশ্বের নেতারা এই সংঘর্ষ থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন:

দেশ/সংগঠনপ্রতিক্রিয়া
জাতিসংঘ“সর্বোচ্চ সংযম” প্রদর্শনের আহ্বান
ইউরোপীয় ইউনিয়নশান্তি ও সংলাপের আহ্বান
যুক্তরাজ্য (প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার)সংলাপ এবং উত্তেজনা হ্রাসের আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্র (প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প)দ্রুত সমাধানের আশা প্রকাশ
বাংলাদেশজাতিসংঘের আহ্বানকে সমর্থন করেছে

এই পরিস্থিতি এখনও উত্তেজনাপূর্ণ, যেখানে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যর্থ হলে আরও বড় সংঘর্ষের আশঙ্কা থেকে যায়।