[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

রাশিয়ার ওপর চাপ বাড়াতে ইউক্রেনে একযোগে ইউরোপীয় নেতাদের সফর

ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করতে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসতে শনিবার প্রথমবারের মতো একসঙ্গে কিয়েভ সফর করেছেন ইউরোপের চার শীর্ষ নেতা।

এই ঐতিহাসিক সফরে অংশ নেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যের্ৎস, পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ডোনাল্ড টাস্ক এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।

তারা জানিয়েছেন, রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হওয়া পর্যন্ত মস্কোর ওপর চাপ অব্যাহত রাখা হবে। কিয়েভ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এই সফরকে ইউক্রেনের প্রতি ইউরোপের ঐক্য ও সমর্থনের প্রতীক হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। বিশেষ করে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিজয়ের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মস্কোতে আয়োজিত অনুষ্ঠানের পরদিনই এই সফরটি হলো।

ইতিহাসে এই প্রথম ইউরোপের চার দেশের শীর্ষ নেতা একসঙ্গে ইউক্রেন সফর করলেন। সদ্য দায়িত্ব নেওয়া জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যের্ৎসেরও এটিই প্রথম কিয়েভ সফর। আর ম্যাখোঁ ২০২২ সালের জুনের পর এবারই আবার ইউক্রেন গেলেন।

সফরের আগে দেওয়া এক যৌথ বিবৃতিতে ইউরোপীয় নেতারা বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক হয়ে রাশিয়ার প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি— তারা যেন পূর্ণাঙ্গ ও নিঃশর্তভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। এতে করে ন্যায়সঙ্গত ও স্থায়ী শান্তিচুক্তির আলোচনার পথ খুলবে।’

তারা আরও বলেন, ‘আমরা চাই রক্তপাত বন্ধ হোক, রাশিয়া আগ্রাসন থামাক এবং ইউক্রেন স্বাধীনভাবে নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার সুযোগ পাক।’

ইউরোপীয় নেতারা যুদ্ধবিরতির কারিগরি বিষয় নিয়েও আলোচনা করতে প্রস্তুতির কথা জানিয়ে দ্রুত শান্তি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন। তবে রাশিয়া এখনো যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে যাচ্ছে।

ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের মিত্ররা অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ না করলে রাশিয়া যুদ্ধবিরতিতে যাবে না। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে রুশ সেনারা আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অগ্রসর হচ্ছে।’

এদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের শান্তি উদ্যোগের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ইউরোপীয় নেতারা বলেন, ‘আমরা রাশিয়ার অবৈধ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের পাশে থাকার সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করছি এবং রাশিয়াকে স্থায়ী শান্তির পথে ফিরিয়ে আনতে আহ্বান জানাচ্ছি।’

শনিবার জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠকের পর ইউরোপীয় নেতারা একটি ভার্চুয়াল সভা করবেন। সেখানে যুদ্ধ-পরবর্তী ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে একটি সম্ভাব্য ইউরোপীয় বাহিনী গঠনের বিষয়েও আলোচনা হবে।

এদিকে ফ্রান্সে পোল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে ম্যাখোঁ বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপকে দ্রুত পরিকল্পনা করতে হবে এবং কোনো পক্ষ তা ভঙ্গ করলে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে।’

ফরাসি প্রেসিডেন্টের এক কর্মকর্তার মতে, এই সফর ইউরোপের ঐক্য, শক্তি এবং দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার সক্ষমতার প্রতীক। এটি পুতিনের সাম্প্রতিক উৎসব আয়োজনেরও তাৎক্ষণিক জবাব।