[ADINSERTER AMP] [ADINSERTER AMP]

সিয়েরা লিওনে বন উজাড় ঠেকাতে মাঠে নেমেছেন গ্রামবাসী

সিয়েরা লিওনের এক জাতীয় উদ্যানে গহীন অরণ্যের গাছ কেটে কয়লা তৈরির দৃশ্য এখন প্রায় নিয়মিত। সাত সন্তানের জননী আমিনাতা সানকোহও জীবিকার তাগিদে এই কাজে নামতে বাধ্য হয়েছেন। যদিও এটি অবৈধ এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা বন রক্ষায় নিয়মিত পাহারা দিলেও দারিদ্র্য ও বেঁচে থাকার লড়াই মানুষকে ঠেলে দিচ্ছে গাছ কাটার দিকে। সংগঠনের নেতা সিজার সেনেসি সতর্ক করে বলেন, ‘আজকের এই ধ্বংস ভবিষ্যতে আমাদের সন্তানদের জীবনকে হুমকিতে ফেলবে।’

পশ্চিম আফ্রিকার এ দেশটির পেনিনসুলা ন্যাশনাল পার্ক একসময় শতভাগ অরণ্যে ঢাকা ছিল। কিন্তু ২০১২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় এক-তৃতীয়াংশ বনভূমি হারিয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, শুধু গত বছরই প্রায় ৭১৫ হেক্টর বন উজাড় হয়েছে।

বিদ্যুৎ সংকট ও উচ্চমূল্যের কারণে এখানকার মানুষের রান্নার জন্য কাঠ-কয়লাই ভরসা। আয়-রোজগারের বিকল্প না থাকায় কয়লা উৎপাদনই হয়ে উঠেছে অনেকের পেশা।

বন সংরক্ষণের সরকারি ব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা ও দুর্নীতির অভিযোগ থাকায় স্থানীয় জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী বাহিনী গঠন করা হয়েছে। এই প্রকল্পে কাজ করছেন প্রায় ৪০ জন। প্রতি মাসে তাদের দেওয়া হচ্ছে ৬০ ডলার করে। এর মাধ্যমে পাওয়া যাচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও বন ধ্বংসের খবর।

এনজিও ‘এনভায়রনমেন্টাল ফাউন্ডেশন ফর আফ্রিকা’র পরিচালক টমি গারনেট জানান, দারিদ্র্য, অজ্ঞতা ও শাস্তির ভয় না থাকায় বন ধ্বংস বাড়ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এখন আর শুধু জরুরি অবস্থায় নেই, বরং অতীব সংকটের মুখে।’

গত এক বছরে প্রায় এক লাখ গাছ রোপণ করা হয়েছে এবং ২০২৮ সালের মধ্যে আরও পাঁচ লাখ গাছ লাগানোর পরিকল্পনা রয়েছে। পরিবেশবাদীরা বলছেন, এখনই কঠোর পদক্ষেপ না নিলে আগামী এক দশকের মধ্যেই দেশের প্রাকৃতিক বন নিশ্চিহ্ন হয়ে যেতে পারে।