ডলার সংকট নয়, আমরা ম্যনেজ করছি – বাংলাদেশ ব্যাংক

সাম্প্রতিক সময়ে বহুল আলোচিত ডলার সংকট প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, “এটি সংকট নয়। আমরা ম্যানেজ করছি।”

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র মোঃ মেজবাউল হক রোববার সন্ধ্যায় GLive24.com কে বলেন, “সমস্যাটা মূলত হয়েছে, রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসনে দেরি হওয়া। এ ব্যাপারে রপ্তানিকারকদের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে, যাতে দ্রুত এটি করা যায়। আর এটি করা গেলে ডলার ব্যবস্থাপনায় কোন অসংগতি থাকবে না।“

তিনি জানান, গত জুলাই থেকে জানুয়ারি সাত মাসে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩২ বিলিয়ন ডলারের উপরে। আর প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স এসেছে ১২ বিলিয়ন ডলারের বেশী। এ দুটি আয় থেকে প্রাপ্ত বিদেশী মুদ্রার পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলার। একই সময়ে আমদানি ব্যয় হয়েছে ৩৯ বিলিয়ন ডলারের কিছু বেশি। তাহলে দৃশ্যত কোনো সংকট নেই।

“কিন্তু সমস্যাটা দাঁড়ায় যখন আমরা আমদানির জন্য এলসি ওপেন করি তখন পুরো পেমেন্ট দিয়ে দিতে হয়। অপরপক্ষে, রেমিটেন্স থেকে প্রাপ্ত আয় সরাসরি দেশে আসলেও রপ্তানি আয় প্রত্যাবাসনের সময় লেগে যায় প্রায় চার মাস বা ১২০ দিন।“

মুখপাত্র বলেন, কোন কোনও রপ্তানি আয় স্বল্প সময়ে প্রত্যাশিত হয় আবার কোনটা সময় লেগে যায় পুরো চার মাস। এজন্য আমরা নগদ ব্যায়ের তুলনায় নগদ আয়ে পিছিয়ে পড়ি। এ সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংককে ডলার ব্যবস্থাপনায় নিবিড় মনোযোগ দিতে হয় এবং আমরা সেটা করছি।”

ডলার সংকট নয়, আমরা ম্যনেজ করছি – বাংলাদেশ ব্যাংক

 

ডলার সংকট নয়, আমরা ম্যনেজ করছি - বাংলাদেশ ব্যাংক

তিনি বলেন, নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য যেমন ভোজ্য তেল, চিনি, পিয়াজ, রসুন ও খেজুর আমদানীতে পর্যাপ্ত অর্থায়ন করা হয়েছে যাতে আগামী রোজার মাসে কোন সংকট না হয়। নতুন করে খোলা এলসি বা আমদানি ঋণপত্রের তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারী মাসে ৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯শ ৪১ মেট্রিকটন চিনি, ৩ লাখ ৯০ হাজার ৮শ তিপ্পান্ন মেট্রিকটন ভোজ্য তেল, ২ লাখ ২৪ হাজার ৫শ ৬৬ মেট্রিকটন পিয়াজ, ৪২ হাজার ৫শ ৬২ মেট্রিকটন রসুন ও ২৯ হাজার ৪শ ৮১ মেট্রিকটন খেজুর আমদানী করা হবে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, প্রতিটি ভোজ্যপন্যই আগের বছরের জানুয়ারী মাসের আমদানীর পরিমানের চেয়ে বেশী। এছাড়া, সরকারের চাহিদা অনুযায়ী জ্বালানী তেল ও গ্যাস আমদানীতে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মূদ্রা সরবরাহ করা হচ্ছে।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

“কোনও কোনও ব্যাংক আমদানীপত্র খুলতে সক্ষমতা হারিয়েছে। আর এজন্য ওইসব ব্যাংকে আমদানীকারকরা গিয়ে ফেরত আসছে। তার মানে এই নয় যে সব ব্যাংক সক্ষমতা হারিয়েছে বা ডলারের ব্যাপক সংকট তৈরী হয়েছে। অনেক ব্যাংক নিজেদের সক্ষমতা অনুযায়ী গ্রাহকদের জন্য আমদানী ঝনপত্র করে দিচ্ছে। আবার কোনও ব্যাংক বাংলাদেশ-ব্যাংকের কাছ থেকে ডলার কিনে আমদানী ঋণপত্র করছে।“

সক্ষমতা বলতে বুঝায় ব্যাংকের নিজস্ব চ্যানেলে গ্রাহকদের পক্ষে রেমিট্যান্স বা রপ্তানি আয় করা। তাহলে ওই ব্যাংকটির বৈদেশিক মূদ্রায় নিজস্ব সক্ষমতা গড়ে উঠে। বাংলাদেশ-ব্যাংক বিভিন্ন সময়ে ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রি করে। কিন্ত এজন্য ব্যাংকটিকে নগদ টাকা পরিশোধ করতে হয়। নগদ টাকায় ডলার কেনার সক্ষমতাও কোনও কোনও ব্যাংকের থাকেনা।

 

ডলার সংকট নয়, আমরা ম্যনেজ করছি - বাংলাদেশ ব্যাংক

 

আবার বেশী ডলার ব্যাংকগুলোর কাছে যাওয়া মানে বেশী পরিমান টাকা বাংলাদেশ-ব্যাংকের কাছে জমা হওয়া। এটিও আবার বাজারে মূদ্রার সরবরাহ সংকূচিত করে। কেন্দ্রীয় ব্যাংককে এসব বিষয় মাথায় রেখে ডলার বা বৈদেশিক মূদ্রার ব্যবস্হাপনা করতে হয়।

আরও পড়ুনঃ

Leave a Comment