নির্বাচনের বছরে বড় ও অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি জনগণের সামনে তুলে ধরতে চায় সরকার। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলটি ভোটের বাজারে জনগণের সমর্থন পাওয়ার লক্ষ্যে ফাস্ট ট্র্যাক খ্যাতের বড় প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখছে।
ইতিমধ্যে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা দুই দফায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের অগ্রগতি পরিদর্শন করেছেন। সে অনুযায়ী সর্বশেষ জানুয়ারি মাস পর্যন্ত অগ্রাধিকারমূলক আটটি প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করেছে আইএমইডি। ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
আইএমইডির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৩ সালের মধ্যে আটটি ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পের মধ্যে মাত্র তিনটির কাজ শেষ হবে। এগুলো হলো পদ্মা সেতু, রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র ও পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর। তবে মেট্রোরেলের কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ না হলেও আগামী ডিসেম্বর মাসে রাজধানীর উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত চলাচল শুরু করার কথা রয়েছে। বাকি চার প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মাতারবাড়ী কয়লাবিদ্যুৎকেন্দ্র, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ ও দোহাজারী-কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণের কাজ এ বছর, অর্থাৎ নির্বাচনের আগে শেষ হবে না। তবে প্রকল্পগুলোয় দৃশ্যমান অগ্রগতি থাকবে।
নির্বাচনের বছরে বড় প্রকল্পগুলোর দৃশ্যমান অগ্রগতি জনগণের সামনে তুলে ধরতে চায় সরকার
এ বিষয়ে বড় অবকাঠামো বিশেষজ্ঞ ও সাবেক সচিব এম ফাওজুল কবির খান জানান, নির্বাচনের আগে বড় ও অগ্রাধিকার প্রকল্পগুলো নামমাত্র উদ্বোধন কিংবা দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখাতেই এত তোড়জোড় করছে সরকার। এতে আসলে প্রকল্পটি যে উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, তা হবে না।
যেমন পদ্মা সেতু চালু হয়েছে, কিন্তু সেভাবে ট্রাফিক বাড়ছে না। মেট্রোরেল আংশিক চালু হলেও জনগণ এর সুফল পাচ্ছে না। তাঁর মতে, সামষ্টিক অর্থনীতির সমস্যা সমাধান হয়নি। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব আদায়ে গতি নেই। আবার ডলার–সংকটেরও সমাধান হয়নি। ফলে উন্নয়ন প্রকল্পগুলোয় অর্থায়নের ঘাটতি হবে।
তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে গত কয়েক মাসে ডলার–সংকট বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, দোহাজারী–কক্সবাজার রেলপথ নির্মাণে নিয়োজিত ঠিকাদারদের বিল পরিশোধে পর্যাপ্ত ডলার মেলেনি। এসব ঠিকাদারকে তাঁদের চাহিদা অনুযায়ী বিল পরিশোধ করা যায়নি।
পদ্মা সেতু প্রকল্পের চীনা ঠিকাদারকে প্রতি মাসে ৪০-৫০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছে প্রকল্প কার্যালয়, যা ঠিকাদারের চাহিদার অর্ধেক। পদ্মা সেতু প্রকল্প কার্যালয় থেকে একাধিকবার বাংলাদেশ ব্যাংক ও অর্থ মন্ত্রণালয়ে অনুরোধ করা হয়েছে। একইভাবে ডলার–সংকটে পড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও মেট্রোরেল প্রকল্প।
আরও দেখুনঃ