ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের ভিডিও সরানোর নির্দেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের ভিডিও সরানোর নির্দেশ, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মোহাম্মদ ফারুকের সঙ্গে অশোভন আচরণ ও জেলা জজের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়া সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে অবিলম্বে অপসারণে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের ভিডিও সরানোর নির্দেশ

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের ভিডিও সরানোর নির্দেশ

 

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) এ নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিল সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ আজ এ আদেশ দেন।

আদালতে আইনজীবীদের পক্ষে ছিলেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকির, সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মোহাম্মদ সাঈদ আহমেদ রাজা, শাহ মঞ্জুরুল হক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।

এটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন তার কার্যালয়ে ব্রিফিং-এ বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে তা কাম্য নয়। হাইকোর্টের আদেশে আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন আইনজীবী আদালতে এসেছিলেন। এটর্নি জেনারেল বলেন, আইনজীবী সমিতির সভাপতিকে নিয়ে বিষয়টি প্রশমনের উদ্যোগ নেবেন এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলবেন।

তিনি বলেন, আদালত আছে বলেই আমরা আইনজীবী। আদালতের প্রতি আমাদের সম্মান থাকতে হবে। তিনি বলেন, উভয়পক্ষকে সংবেদনশীল যতœশীল হতে হবে। আদালতকেও আইনজীবীদের বুঝিয়ে কাজ করতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় যে ঘটনা ঘটেছে, এ ধরনের ঘটনা ভূলবার্তা দেয়। বিচারপ্রার্থী জনগন যেন ভোগান্তিতে না পড়ে তা সকলকে নিশ্চিত করতে হবে।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

আজ শুনানিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিন আইনজীবী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে আইনজীবীদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। এর আগে এ ঘটনায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তানভীর আহমেদ ভূঞা, সম্পাদক (প্রশাসন) আইনজীবী মো. আক্কাস আলী, আইনজীবী জুবায়ের ইসলামকে আজকে স্বশরীরে হাজির হয়ে তাদের ওই ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছিল। গত ৫ জানুয়ারি আদালত অবমাননার রুলসহ আদেশ দেন হাইকোর্ট।

এর আগে গত ২ জানুয়ারির ঘটনায় ‘এজলাসে আদালতের বিচারক ও কর্মচারীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও অশালীন আচরণের জন্য আদালত অবমাননার ব্যবস্থা গ্রহণের প্রার্থনা’ শীর্ষক একটি চিঠি সুপ্রিমকোর্টে পাঠান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের-১ বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ ফারুক।

এ চিঠি প্রধান বিচারপতি বরাবরে উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার জেনারেল। পরে বিষয়টি নিষ্পিত্তির জন্য প্রধান বিচারপতি বিচারপতি জেবিএম হাসানের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে উপস্থাপনের জন্য গত ৪ জানুয়ারি পাঠিয়ে দেন। সে অনুসারে এই বেঞ্চে নথি উপস্থাপন করা হয়। এরপর হাইকোর্ট তিন আইনজীবীকে তলবের পাশাপাশি তাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করেন।

এরপর ১০ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বারের ২১ আইনজীবীকে তলব করেন হাইকোর্ট। আগামী ২৩ জানুয়ারি আদালতে হাজির হয়ে এই বিষয়ে তাদের ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ বেগম শারমিন নিগারের আদালত প্রাঙ্গণে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়ার ঘটনায় হাইকোর্ট রুলসহ এই আদেশ দেন। রুলে ওই ২১ আইনজীবীর বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ গ্রহণ করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে অসদাচরণের ভিডিও সরানোর নির্দেশ

 

যে ২১ আইনজীবীকে তলব করা হয়েছে, তারা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মো. মফিজুর রহমান বাবুল, আইনজীবী মিনহাজুল ইসলাম, এমদাদুল হক হাদি, নিজামুদ্দিন খান রানা, আনিছুর রহমান মঞ্জু, মো. জুম্মন চৌধুরী, রাশেদ মিয়া হাজারী, জাহের আলী, মো. আ. আজিজ খান, দেওয়ান ইফতেখার রেজা রাসেল, মো. ছদর উদ্দিন, মাহমুদুর রহমান রনি, মো. মাহবুবুর রহমান, মো. আরিফুল হক মাসুদ, মীর মোহাম্মদ রাইসুল

আহম্মেদ, মহিবুর রহমান, মো. জাকারিয়া আহমেদ, মো. মোবারক উল্লা, মো. ফারুক আহমেদ, সফিক আহমেদ, ইকবাল। ওই ঘটনায় গত ৯ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা জজ বেগম শারমিন নিগার প্রধান বিচারপতির কাছে একটি আবেদন করেন। আবেদনে জেলা জজ আদালতে এজলাস চলাকালে বিচারকের নামে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দিয়ে বিচার বিঘিœত ও বিচার ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ মানহানির ঘটনায় প্রতিকার চাওয়া হয়।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment