শামসুল হক (১ ফেব্রুয়ারি ১৯১৮ – ১৯৬৫) একজন বাঙালি রাজনীতিবিদ যাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়েছিল বিভাগ-পূর্ব ভারতবর্ষে এবং যিনি পরবর্তীতে বাংলাদেশের অন্যতম রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। তিনি ছিলেন আওয়ামী -লীগের পূর্বসূরী আওয়ামী মুসলিম -লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি পাকিস্তানের গণ পরিষদের সংসদীয় কমিটির -সদস্য ছিলেন।
শামসুল হক । বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ
জন্ম
টাঙ্গাইল জেলার দেলদুয়ার উপজেলায় এক নিভৃত গ্রাম মাইঠানে ১৯১৮ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি ১ শামসুল -হক তার মামাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈতৃক বাড়ি একই উপজেলার টেউরিয়া গ্রামে।
পাক-ভারত স্বাধীনতা পূর্ব রাজনীতি
১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে বঙ্গীয় প্রাদেশিক মুসলিম-লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে আবুল হাশিম সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। আবুল হাশিমের সাংগঠনিক শক্তির বলে ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দের আগস্টের মধ্যে পূর্ব বঙ্গে মুসলীম লীগের সভ্য সংখ্যা দাঁড়ায় দশ লক্ষে।
১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে আবুল হাশিম ঢাকায় চলে আসেন এবং ১৫০ নং মোগলটুলীতে ৯ এপ্রিল মুসলিম লীগ কর্মী-শিবির স্থাপন করেন। এই কর্মী শিবিরের নেতৃত্বে ছিলেন শামসুল -হক। এই কর্মী শিবির হতেই পরবর্তীতে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী মুসলিম লীগ (পরে আওয়ামী লীগ) জন্ম লাভ করে।
শামসুল -হকের নেতৃত্বেই এই কর্মী শিবির ১৯৪৫-৪৬ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব বাংলায় মুসলিম লীগকে জনসাধারণের গণসংগঠনে পরিণত করে। মুসলিম লীগ ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দের নভেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের নির্বাচনে পূর্ববঙ্গের মুসলিম লীগ মনোনীত প্রার্থীরা প্রায় সকলেই জয় লাভ করে।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দের প্রাদেশিক আইন সভার নির্বাচনে মুসলিম লীগ শতকরা ৯৭ ভাগ আসনেই জয়লাভ করে। তখন একমাত্র বাংলা ছাড়া ভারতের আর কোথাও কোন প্রদেশে মুসলিম -লীগের একক সরকার ছিল না।
বাংলায় মুসলিম -লীগের মন্ত্রিসভা না থাকলে জিন্নাহ মুসলিম লীগকে ভারতের মুসলমানদের প্রতিনিধিত্বকারী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারতেন না এবং কংগ্রেসও ভারত বিভাগ মেনে নিতে পারত না। এদিক দিয়ে বিবেচনায় পাকিস্তান সৃষ্টিতে শামসুল হকের গুরুত্বপূর্ণ অবদান অনস্বীকার্য। এছাড়া ভারত বিভাগের সময় সিলেটে গণভোটে জামায়াতে উলামায়ে হিন্দের প্রবল বিরোধীতার মুখে ঐ কর্মী শিবিরের সদস্যদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই সিলেট পাকিস্তানভুক্ত হতে পেরেছিল।
আরও দেখুনঃ