আব্দুল হালিম বাংলায় কমিউনিস্ট আন্দোলন ও সংগঠন গড়ে তােলার অন্যতম পথিকৃৎ।
আব্দুল হালিম | বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ
জন্ম ও শৈশব
জন্ম বর্ধমানের কেউবুড়ীতে। তার পিতা আবুল হােসেন কীর্ণাহার জমিদারের কর্মচারী ছিলেন। শৈশবে পিতা-মাতার মৃত্যু হলে বীরভূমের সরডাঙা গ্রামে মাতুলালয়ে দিন কাটে। নবম শ্রেণী পর্যন্ত পড়ে বাড়ি ছেড়ে কলকাতায় চলে আসেন, কিছুদিন জাহাজে শ্রমিকের কাজ করেন। এই সময়ে নিজ উদ্যোগে বাংলা ও ইংরেজি ভাষায় অসামান্য দখল অর্জন করেন। নিয়মিত সাধারণ পাঠাগারে গিয়ে পড়াশোনার চর্চা করতেন।
রাজনৈতিক জীবন
১৯৩০ খ্রি. ‘কার্টার্স স্ট্রাইক’-এর সময় ইস্তাহার প্রকাশ করে কারাবুদ্ধ হন। ১৯৩০-৩২ খ্রি. ৮ জন সর্বক্ষণের কর্মীকে নিয়ে তিনি কর্মীদের মার্কসবাদী পূস্তকাদি পড়ান ও ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বিভিন্ন পার্টি গ্রুপগুলিকে একসুত্রে বাঁধার কাজ করেছেন। ১৯৩৩ খ্রি. তাঁর উদ্যোগে এবং রণেন সেন ও সোমনাথ লাহিড়ীর সহযােগিতায় কলকাতায় গােপনে কমিউনিস্ট পার্টির একটি সারা ভারত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে যে একটি কেন্দ্রীয় কমিটি নির্বাচিত হয় তিনি তার সদস্যপদ লাভ করেন।
আমৃত্যু তিনি পার্টির কেন্দ্রীয় কন্ট্রোল কমিশনের সদস্য ছিলেন। বিভিন্ন ট্রেড ইউনিয়ন গড়ার কাজ পরিচালনা করেন। ১৯৩১-৩৪ খ্রি. তাঁর সহায়তায় ‘ছাত্র লিগ’ গঠিত হয়। ১৯৪৪ খ্রি. পর্যন্ত তিনি জাতীয় কংগ্রেসের সদস্য ছিলেন। ১৯৩৪ খ্রি. পর্যন্ত বাংলা ও হিন্দিতে বেশ কয়েকটি পত্রপত্রিকা প্রকাশ করেন। এ সময় প্রকাশক, সম্পাদক, লেখক হিসাবে গ্রেপ্তার হয়েছেন। ১৯৩৪-৩৮ খ্রি. কারাগারে থাকার সময়ে বন্দিদের মধ্যে মার্কসবাদের প্রচার করেছেন।
১৯৪০-৪২ খ্রি. ও ১৯৫০-৫২ নিবর্তনমূলক আটক আইনে বিভিন্ন জেল ও বন্দিশিবিরে আটক থাকেন। দীর্ঘদিন আত্মগােপন করে পার্টির কাজ করেছেন। ১৯৫৫-৫৬, ৫৮-৫৯ খ্রি. কয়েকবার ট্রাম ও খাদ্য আন্দোলনে গ্রেপ্তার হয়েছেন। নভেম্বর ১৯৬২ খ্রি. ভারতরক্ষা আইনে গ্রেপ্তার হয়ে মার্চ ১৯৬৪ খ্রি. পর্যন্ত আটক থাকেন। জুলাই ১৯৬৫ খ্রি, পুনরায় গ্রেপ্তার হয়ে মৃত্যুর মাত্র ১০ দিন আগে ছাড়া পান। কমিউনিস্ট সাহিত্য প্রকাশের উদ্যোগে ‘গণশক্তি পাবলিশিং হাউস’ প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর রচিত পুস্তক : টীকা সহ কমিউনিস্ট ইশতেহার, কমিউনিজম, রুশিয়ার গণ-আন্দোলন প্রভৃতি। ১৯৫২ খ্রি. নির্বাচন থেকে আমৃত্যু বিধান পরিষদের সদস্য ছিলেন।
আরও দেখুনঃ