আবদুজ জহুর | বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

আবদুজ জহুর বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ ও সাবেক সাংসদ। তিনি ১৯৭০ সালের নির্বাচনে (সুনামগঞ্জ উত্তর এবং তাহিরপুর নির্বাচনী এলাকা) পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য (এমপিএ), ১৯৭৩ সালে তিনি সাবেক সিলেট-৫, দোয়ারাবাজার- ছাতক (বর্তমান সুনামগঞ্জ-৫ আসন) থেকে ও ১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ-৪ (বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সদর) আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।

আবদুজ জহুর | বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

 

আবদুজ জহুর | বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

 

জন্ম ও প্রাথমিক জীবন

আবদুজ জহুর ১০ নভেম্বর ১৯২৫ সালে ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির (বর্তমান বাংলাদেশ) সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার বিন্নাকুলি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মৃত ঠাকুর ধন তালুকদার ও মায়ের নাম আমেনা বেগম। সাত ভাই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন তিনি ছিলেন তৃতীয়। 

শিক্ষা জীবন

আবদুজ জহুর ১৯৩৭ সালে রাজারগাঁও প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। ১৯৩৮ সালে তিনি গৌরারং মধ্য ইংরেজি স্কুলে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হন। সেখানে চার বছর লেখাপড়া করার পর মাধ্যমিক বৃত্তি পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে পাশ করেন। পরবর্তীতে তিনি সুনামগঞ্জ জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে ম্যাট্রিক পাশের পর সিলেট এমসি কলেজ থেকে ১৯৫২ সালে বিএ ডিগ্রী লাভ করেন। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

রাজনৈতিক ও কর্মজীবন

আবদুজ জহুরের ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ১৯৪৭ সালে সুনামগঞ্জ মহকুমা মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। পরবর্তীতে গণতান্ত্রীক দলে যোগদান করে দেন। ১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলনে জড়িত ছিলেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে সক্রিয় ভুমিকা পালন করেন। ১৯৫৫ সালে ৯২(ক) ধারা জারী হলে তিনি গ্রেফতার হয়ে দশ মাস জেল খাটেন।

১৯৬৯ সালে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৬১ সাল পর্যন্ত সাতগাঁও হাই স্কুলে শিক্ষক হিসাবে যোগদান করে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে (সুনামগঞ্জ উত্তর এবং তাহিরপুর নির্বাচনী এলাকা) প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশ গ্রহণ করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি সাবেক সিলেট-৫, দোয়ারাবাজার-ছাতক (বর্তমান সুনামগঞ্জ-৫ আসন) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিব হত্যার পর তাকে গ্রেফতার করে প্রায় দুই বছর কারাগারে রাখা হয়। 

জহুর ১৯৮০ সালে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৮৮ সালে সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯৭ সালে দ্বিতীয় বার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত এই দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে সুনামগঞ্জ-৪ (বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সদর) আসন থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৭৯ সালের দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে, ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ ও জুন ১৯৯৬ সালের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে সুনামগঞ্জ-৪ (বিশ্বম্ভরপুর-সুনামগঞ্জ সদর) নির্বাচনী এলাকা থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করে পরাজিত হন।

 

আবদুজ জহুর | বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ

 

পারিবারিক জীবন

তিনি ১৯৫৯ সালে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের বড়দল গ্রামের তালুকদার বাড়ীর মোহাম্মদ হুসেন তালুকদারের মেয়ে বেগম রহিমা জহুরকে বিয়ে করেন। তাদের ছয় ছেলে মেয়ের মধ্যে বড় মেয়ে ফাতেমা চৌধুরী স্বপ্না বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী, তারপর নাজমা বেগম তিনিও বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী, তৃতীয় এডভোকেট রীতা বেগম। ছেলে জুনেদ আহমেদ, ব্যবসা করেন বর্তমানে সুনামগঞ্জ, সুলতানা রাজিয়া নিতা এবং পাবেল আহমদ বর্তমানে আমেরিকা প্রবাসী।

মৃত্যু

২২ মে ২০০৭ সালে মৃত্যুবরণ করেন।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment