খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, ভাষাসৈনিক, সাবেক অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল মাল আবদুল মুহিত’র মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ সরকারের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার নেতৃবৃন্দ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। আজ পৃথক শোক বার্তায় তারা আবুল মাল আবদুল মুহিত’র রুহের মাগফেরাত কামনা করেন এবং তার পরিবারের শোকসন্তপ্ত সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য, ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু, আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, এলজিআরডি মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান, শিল্পমন্ত্রী
নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী, বীরপ্রতীক, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, রেলপথ মন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
এছাড়া, আবুল মাল আবদুল মুহিত’র মৃত্যুতে শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জাসদ সভাপতি ও তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খসরু, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এলজিআরডি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ, সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ,
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরা, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল এবং পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ¦ আবু আহমেদ মন্নাফী ও সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ মো. হুমায়ুন কবির ও গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৬ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
আবুল মাল আবদুল মুহিত এর ৮৮ বছরের বর্ণাঢ্য জীবনের অবসান
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তত্ত্বাবধানে, মুহিতের অর্থনৈতিক দূরদৃষ্টির সাথে, বাংলাদেশ এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বর্ধিত বাজেটের আকার, জনসাধারণের ব্যয়, সামাজিক সুরক্ষার জালে বর্ধিত ব্যয়, মেগা প্রকল্পের কাজগুলো চালু করাসহ বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে উচ্চ ব্যয়ের সাথে সুষ্ঠু সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা প্রত্যক্ষ করেছে এবং দারিদ্র্যের হারও হ্রাস পেয়েছে।
এইচ এম এরশাদ সরকারের পক্ষে টানা দুই বছর ১৯৮৩ এবং ১৯৮৪ অর্থবছরের জন্য বাজেট পেশ করার পর, মুহিত প্রথম আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে ১,১৩,৮১৫ কোটি টাকা ব্যয়ের বাজেট পেশ করেন। ১০ বছরের ব্যবধানে, বাংলাদেশের বাজেটের আকার প্রায় চার গুণ বেড়েছে, কারণ মুহিত তার কার্যালয়ে এবং ২০১৯ অর্থবছরে ৪,৬৪,৫৭৩ কোটি টাকা ব্যয়ের শেষ বাজেট পেশ করেছিলেন।
জন্ম ও প্রারম্ভিক জীবনঃ- মুহিত ১৯৩৪ সালের ২৫ জানুয়ারি সিলেটে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা সৈয়দা সাহার বানু চৌধুরী ও বাবা আবু আহমদ আবদুল হাফিজ। মা-বাবা দুইজনই তৎকালীন সিলেট জেলার রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। ১৪ ভাইবোনের মধ্যে তিনি তৃতীয় ছিলেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন তার ছোট ভাই।
পরবর্তীতে স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে পরিকল্পনা কমিশনের সচিব হিসেবে নিযুক্ত হন। এছাড়াও, ১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বহিঃসম্পদ বিভাগের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মুহিত।
বাংলাদেশ থেকে এসকাপের প্রথম চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯৮৩ খ্রিষ্টাব্দে দায়িত্বপালন করেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
পরে ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে গঠিত অস্থায়ী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়াশিংটন দূতাবাসে ইকনমিক কাউন্সেলরের দায়িত্ব পালেন করেন তিনি।
সরকারী চাকরি থেকে অবসরগ্রহণ-ঃ ১৯৮১ আবুল মাল আবদুল মুহিত সরকারি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন। এরপর তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের অর্থনীতি এবং উন্নয়ন বিভাগের একজন বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করেন। আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন সংস্থা বা ইফাদেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ, আইডিবি এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ পদে তিনি সুনামের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবন-ঃ বৈবাহিক সূত্রে তার স্ত্রী সৈয়দা সাবিয়া মুহিত একজন ডিজাইনার। তাদের সংসারে দুই পুত্র এবং এক কন্যা রয়েছে। সামিয়া মুহিত একজন ব্যাংকার এবং মুদ্রা নীতি খাতের একজন বিশেষজ্ঞ। তাদের জ্যেষ্ঠ পুত্র শাহেদ মুহিত একজন বাস্তুকলাবিদ এবং কনিষ্ঠ পুত্র সামির মুহিত একজন শিক্ষক।
লেখালেখি-ঃ তিনি বহু গ্রন্থের লেখক। তার লেখা কিছু গ্রন্থ হল: স্মৃতিময় কর্মজীবন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও সম্ভাবনা,বাংলাদেশের অভ্যুদয়, স্মৃতিতে অম্লান ১৯৭১ বাংলাদেশ : জাতিরাষ্ট্রের উদ্ভব মহাপুরুষদের কথা কাছে থেকে দেখা,নানা দেশ নানা জাতি,স্মৃতির মণিকোঠায় আমার সিলেট, মুক্তিযুদ্ধের রচনা সমগ্র বসবাসের উপযুক্ত বাংলাদেশ চাই, সংকট ও সুযোগ আমাদের জাতীয় সংসদ ও নির্বাচন, নির্বাচন ও প্রশাসন,আমাদের বিপন্ন পরিবেশ, সোনালি দিনগুলি, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাতাশ মাস, ও রাজনৈতিক ঐকমত্যের সন্ধানে।
আরও দেখুনঃ
- ধর্মীয় গোঁড়ামি কখনোই বাঙালির ওপর দীর্ঘমেয়াদে চেপে বসতে পারে নাই: জয়
- তরুণীকে কানাডা সরকারের হাতে তুলে দিতে হাইকোর্টের আদেশ
- বরিশাল অশ্বিনী কুমার টাউন হল সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বিসিসি
- প্রকল্প অনুমোদন : একনেকে ৪,৫৪১ কোটি ৮১ লাখ টাকার ১১ টি প্রকল্প অনুমোদন
- খুলে গেল সূর্যতোরণ : শেরপুরবাসীর ঘরে ঘরে আলোর পরশ
- ওবায়দুল কাদেরঃ জনকল্যাণকর রাজনীতির পথে আসুন