আব্দুর রাজ্জাক ভোলা (জন্ম ১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫০) হলেন একজন বাংলাদেশি কৃষিবিদ ও রাজনীতিবিদ। তিনি ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে টাংগাইল-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের তৎকালীন খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এবং পরবর্তীতে ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন। ২০১৯ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে হাসিনার চতুর্থ মন্ত্রিসভায় তিনি কৃষি মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। সংবিধান অনুযায়ী দশম জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে ৩ জানুয়ারী ২০১৯ তারিখে একাদশ সংসদের সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি শপথবাক্য পাঠ করেন।
Table of Contents
আব্দুর রাজ্জাক ভোলা | বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ
প্রাথমিক ও কর্মজীবন
আব্দুর রাজ্জাক ১৯৫০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি টাংগাইল জেলার ধনবাড়ী উপজেলার মুশুদ্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম জালাল উদ্দিন এবং মাতার নাম রেজিয়া খাতুন। ১৯৭১ সালে তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক এবং ১৯৭২ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। ১৯৮২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের পারডু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি পিএইচডি অর্জন করেন। যুক্তরাষ্ট্রের পর তিনি যুক্তরাজ্যের অ্যাঞ্জেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ালেখা করেছেন। বাংলাদেশে ফার্মিং সিস্টেম রিসার্চ ও স্থায়ী গ্রামীণ কৃষি উন্নয়ন বিষয়ে তিনি অন্যতম একজন বিশেষজ্ঞ।
রাজ্জাক, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনে (বিএডিসি) একজন বৈজ্ঞানীক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন এবং ২০০১ সালে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা পরিষদের প্রধান বৈজ্ঞানীক কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরীজীবন শেষ করেন।
রাজনৈতিক জীবন
রাজ্জাক ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে জড়িত হন। ২০০১ সালে কর্মজীবন শেষ করে প্রথমবারের মত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির কৃষি ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশের তৎকালীন খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর এ মন্ত্রণালয়কে ভাগ করে খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় নামে পৃথক দুটি মন্ত্রণালয় তৈরির পর তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৪ সাল থেকে তিনি জাতীয় সংসদের ‘অর্থ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি’র চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
২০১৬ সালে আব্দুর রাজ্জাক বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য (সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী কমিটি) নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী পরিচালনার জন্য গঠিত নির্বাচন সংক্রান্ত পর্যবেক্ষক সমন্বয় উপকমিটির আহ্বায়ক ছিলেন।
সংসদ সদস্য:
সংসদ সদস্য জনপ্রতিনিধি হিসেবে পার্লামেন্ট বা জাতীয় সংসদে সরকার কিংবা বিরোধীদলীয় সদস্য হিসেবে অংশগ্রহণ করে থাকেন। এর ইংরেজি প্রতিরূপ হচ্ছে ‘মেম্বার অব পার্লামেন্ট’ বা ‘এমপি’ এবং বাংলায় ‘সংসদ সদস্য’ কিংবা ‘সাংসদ’। এছাড়া, ফরাসী ভাষায় সংসদ সদস্যকে ‘ডেপুটি’ নামে অভিহিত করা হয়।
পরিচিতি
সংসদীয় গণতন্ত্রে একজন সংসদ সদস্য আইন-প্রণয়ন বিশেষতঃ রাষ্ট্রীয় আইন ও নাগরিক অধিকার প্রণয়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। সাধারণ অর্থে নির্দিষ্ট সংসদ কিংবা জাতীয় সংসদের সদস্যই এমপি বা সংসদ সদস্য হিসেবে আখ্যায়িত হন।
বিশ্বের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে দ্বি-স্তরবিশিষ্ট সংসদীয় গণতন্ত্র রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে – উচ্চ কক্ষ এবং নিম্ন কক্ষ। সেক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধি হিসেবে ‘সংসদ সদস্য’ পদটি নিম্নকক্ষের জন্য প্রযোজ্য। সচরাচর জনপ্রতিনিধি হিসেবে সংসদ সদস্য পদটি উচ্চ কক্ষে ভিন্ন পদে উপস্থাপন ও চিহ্নিত করা হয়। উচ্চ কক্ষ হিসেবে সিনেটে সংসদ সদস্য তখন তিনি ‘সিনেটর’ পদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
অবস্থান
সংসদ সদস্য হিসেবে ব্যক্তিকে প্রাথমিকভাবে দলের সদস্যরূপে তাঁর অবস্থানকে নিশ্চিত করতে হয়। পরবর্তীতে দলীয় সভায় মনোনয়নের মাধ্যমে সরাসরি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও জনমতের যথার্থ সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রতিফলনে তিনি এমপি হিসেবে নির্বাচিত হন। কখনোবা প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর অভাবে তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে থাকেন। সাধারণতঃ সংসদ সদস্য কোন একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের সদস্য হয়ে থাকেন। দলীয়ভাবে মনোনয়নলাভে ব্যর্থ হলে কিংবা দলীয় সম্পৃক্ততা না থাকলেও ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী’ হিসেবে অনেকে নির্বাচিত কিংবা মনোনীত সংসদ সদস্য হন।
সংসদ সদস্যকে অনেকে ‘সাংসদ’ নামেও ডেকে থাকেন। তবে, নিত্য-নৈমিত্তিক বা প্রাত্যহিক কর্মকাণ্ডে ‘মেম্বার অব পার্লামেন্ট’ হিসেবে সংসদ সদস্যকে ‘এমপি’ শব্দের মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত আকারে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানকালে প্রচারমাধ্যমে সাধারণ অর্থেই এমপি শব্দের প্রয়োগ লক্ষ্যণীয়।
আরও দেখুনঃ