কিডনি [ Kidney ] নিয়ে আমাদের পাঠকদের নানা রকম প্রশ্ন রয়েছে। তারা জানতে চান – কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার [ Symptoms and treatment of kidney disease ] , কিডনি রোগের লক্ষণ [ Symptoms of kidney disease ], কিডনি ভালো রাখার উপায় [ Ways to keep the kidneys healthy ], কিডনি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা [ Home Remedies for Kidney Disease ] , কিডনি রোগের ঔষধ কি – ইত্যাদি বিষয়ে। তারা জানতে চান কিডনি রোগীর খাবার, কিডনি রোগের প্রাকৃতিক চিকিৎসা, কিডনি পরীক্ষার রিপোর্ট, কিডনি ইনফেকশনের লক্ষণ, কিডনি রোগের খাবার, কিডনি কত পয়েন্ট, কিডনি রোগের ঔষধের নাম, কিডনি রোগের ভেষজ ঔষধ, কিডনি রোগের পরীক্ষা, কিডনি সমস্যার সমাধান, কিডনি পরীক্ষা, কিডনি ড্যামেজের লক্ষণ, কিডনি রোগের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা, কিডনি সমস্যা বোঝার উপায়, কিডনি রোগের লক্ষণ কি কি ইত্যাদি।
তাদের প্রশ্ন তালিকায় আরও রয়েছে – কিডনি ভালো রাখার খাদ্য, কিডনি পাথর গলায় কোন খাবার, কিডনি ভালো রাখার খাবার, কিডনি রোগে কালোজিরা, কিডনি রোগের কারন, কিডনি পরিষ্কার করার পদ্ধতি – ইত্যাদি। অনেকেই খোঁজ করেন – কিডনি হাসপাতালের ঠিকানা, কিডনি হাসপাতাল ঢাকা, কিডনি ফাউন্ডেশন
আমরা অত্যন্ত আশ্চর্য হয়ে লক্ষ্য করেছি তারা এও জানতে চান – কিডনি বিক্রি, কিডনি বিক্রি দাম 2020, কিডনি বিক্রি দাম 2021, কিডনি বেচার ঠিকানা, কিডনি বিক্রি হাসপাতাল, কিডনি বিক্রি হাসপাতাল বাংলাদেশ, কিডনি বিক্রি করবো কিভাবে, কিডনি বিক্রি দাম, কিডনি বেচার ঠিকানা, কিডনি বিক্রি করা যায় কোথায়, কিডনি বিক্রি করবো কোথায় – ইত্যাদি বিষয়ে।
তাই বোঝাই যাচ্ছে কিডনি [ Kidney ] নিয়ে মানুষের অনেক জিজ্ঞাসা আছে। কিন্তু অনলাইনে কিডনি সংক্রান্ত প্রচুর বিভ্রান্তিকর তথ্যও দেখা যায়। তাই আমরা নির্ভরযোগ্য তথ্যগুলো সংগ্রহ করে আপনাদের জন্য তুলে ধরলাম।
Table of Contents
কিডনি কী?
কিডনি [ Kidney ] যার বাংলা নাম “বৃক্ক”। কিডনি মানব শরীরের একটি অত্যাবশ্যক অঙ্গ। কিডনি দেখতে দুটি লালচে-বাদামী শিমের আকৃতির অঙ্গ। এটা মুলত মেরুদণ্ডী প্রাণীদের মধ্যে পাওয়া যায়। কিডনি শরীরের রক্ত পরিস্কার করার কাজ করে। রক্ত পরিস্কার করে মূত্র তৈরি করে।
শরীরের কিডনিযুগলে প্রতি মিনিটে ১২০০ মিলিলিটার রক্ত পরিস্তুত হবার জন্য আসে, এটি হৃদয়দ্বারা শরীরে পৌছানো রক্তের ২০%। এইভাবে আনুমানিক প্রতি ২৪ ঘণ্টাতে ১৭০০ লিটার রক্ত পরিস্তুত হয়। রক্ত পরিস্তুত একক (Functional Unit) নেফ্রন একটি ছাকনির মতো কাজ করে।
প্রত্যেক কিডনিতে দশ লক্ষ নেফ্রন থাকে। নেফ্রন প্রধানত দুটি অংশে বিভাজিত, গ্লোমেরুলাস এবং টিউবিউলস। আপনি জেনে বিস্মিত হবেন যে গ্লোমেরুলাস নামক ছাকনি প্রত্যেক মিনিটে ১২৫ মিলিলিটার মূত্র সৃষ্টির মাধ্যমে ২৪ ঘন্টাতে মোট ১৮০ লিটার মূত্র সৃষ্টি করে থাকে। এই ১৮০ লিটার মূত্রের মধ্যে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ, ক্ষার এবং বিষাক্ত পদার্থ থাকে। একই সঙ্গে এর মধ্যে প্রয়োজনীয় পদার্থ, যথা গ্লুকোজ এবং অন্য পদার্থও থাকে। গ্লোমেরুলাস দ্বারা সৃষ্ট ১৮০ লিটার মূত্র টিউবিউলসে আসে, যেখানে ৯৯% দ্রব্য পুনঃশোষিত (Reabdorption) হয়।
টিউবিউলসে হওয়া পুনঃশোষণকে বুদ্ধিদীপ্ত পুনঃশোষণ বলে। ইহার কারণ ১৮০ লিটারের মতো অধিক মাত্রাতে সৃষ্ট মূত্রের মধ্য থেকে প্রয়োজনীয় পদার্থ এবং জল পুনরায় শরীরে ফিরিয়ে নেওয়া হয়। কেবলমাত্র ১ থেকে ২ লিটার মূত্রের মাধ্যমে অপ্রয়োজনীয় পদার্থ এবং অ্যাসিড(Acid) শরীরের বাইরে নিষ্কাশন করা হয়। এইভাবে কিডনি দ্বারা নানাবিধ জটিল পরিশোধন প্রক্রিয়ার দ্বারা প্রস্তুত মূত্র মূত্রবাহী নালিকার দ্বারা মূত্রাশয়ে জমা হয় এবং মূত্র নালিকার দ্বারা শরীরের বাইরে নিষ্কাশিত হয়।
কিডনির প্রয়োজন এবং গুরুত্ব
কাজ বোঝার আগে জেনে নেয়া যাক – কিডনির প্রয়োজন এবং গুরুত্ব :
- প্রত্যেক ব্যক্তির আহারের ধরন ও মাত্রা প্রতিদিন পরিবর্তিত হয়।
- আহারের মধ্যে বৈচিত্র্যের কারণে শরীরে জল, অম্ল ও ক্ষারের মাত্রা নিরন্তর পরিবর্তিত হয়।
- আহারের পাচন প্রাক্রয়ার সময় অনেক অনাবশ্যক পদার্থ শরীরে উৎপন্ন হয়
- শরীরে জল, অম্ল বা ক্ষারের সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য রাসায়নিক পদার্থের মাত্রার ভারসাম্য নষ্ট না হলে তা মানুষের
- পক্ষে হানিকারক বা মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
- কিডনি শরীর থেকে অনাবশ্যক দ্রব্য বা পদার্থ মূত্র হিসাবে শরীর থেকে বের করে রক্তের পরিশোধন করে এবং
- শরীরে ক্ষার এবং অম্লের ভারসাম্য বজায় রাখে। এইভাবে কিডনি শরীরকে স্বচ্ছ এবং সুস্থ রাখে।
কিডনির কাজ কি?
কিডনির প্রধান কাজগুলো হলো:
রক্তের পরিশোধন : কিডনি নরলসভাবে সর্বক্ষণ উৎপন্ন অনাবশ্যক পদার্থগুলিকে মূত্রদ্বারা শরীর থেকে দূর করে।
শরীরে জলের ভারসাম্য বজায় রাখা : কিডনি শরীরের প্রয়োজনের অতিরিক্ত জল মূত্রদ্বারা শরীর থেকে বাইরে বের করে।
শরীরে অম্ল এবং ক্ষারের ভারসাম্য বজায় রাখা : কিডনি শরীরে সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্লোরইড, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফেটস, বাই কার্বনেট ইত্যাদির মাত্রা যথাযথ রাখার কাজ করে। সোডিয়ামের মাত্রা বাড়া বা কমার সঙ্গে মাথার উপর,আর পটাশিয়ামের মাত্রা বাড়া-কমার সঙ্গে হৃদয় বা স্নায়ুতন্ত্রের গতিবিধির গভীর প্রভাব পড়তে পারে।
রক্তচাপের নিয়ন্ত্রণ : কিডনি অনেক হরমোন নিঃসরণ করে যেমন অ্যানজিওটেনসিন, অ্যালডোস্টেরন, প্রোস্টাগ্ল্যানডিন। এই হরমোনগুলির সাহায্যে একদিকে যেমন শরীরে জলের মাত্রা,অম্ল এবং ক্ষারের ভারসাম্য বজায় থাকে। এই ভারসাম্যের দ্বারা কিডনি শরীরে রক্তচাপ বজায় রাখার কাজ করে।
রক্তকণিকা উৎপাদনে সাহায্য : রক্তে উপস্থিত লোহিত রক্ত কণিকায় (RBC)সৃষ্টি চডনিতে প্রতি মিনিটে| এরিগ্রোপোয়েটিন হরমোনের সাহায্যে অস্থিমজ্জাতে (Bone Marrow) হয়। এরিথ্রোপোয়েটিন কিডনি দ্বারা প্রস্তুত হয়। কিডনি বিকল(Fail)হলে এই হরমোনের নিঃসরণ কমে যায় বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, যারা ফলে রক্ত ফ্যাকাসে হয়ে যায়, গ্লোমেরুলাই প্রত্যেক যাকে অ্যানিমিয়া (রক্ত কমে যাওয়ার রোগ) বলে।
হাড়ের স্বাস্থ্য : কিডনি সক্রিয় ভিটামিন-ডি, তৈরি করতে সাহায্য করে থাকে। এই ভিটামিন-ডি , শরীরে ক্যালসিয়াম আর ফসফরাসের জরুরি মাত্রা বজায় রেখে হাড় এবং দাঁতের বিকাশ ও মজবুত করার মতো গুরুত্বপূর্ণ কার্য করে থাকে।
মানুষের শরীরে কিডনির সংখ্যা কটি?
স্ত্রী ও পুরুষ দুজনের শরীরেই সাধারণত দুটি কিডনি থাকে।
কিডনি কোথায় থাকে?
কিডনি পেটের ভিতরে, পিঠের দিকে, মেরুদণ্ডের দুই পাশে কোমরের অংশে অবস্থিত।
কিডনির আকার ও ওজন কেমন হয়?
কিডনির আকার সিম বীজের মতো হয়। প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির কিডনি সাধারণত ১০ সেন্টিমিটার লম্বা, ৫ সেন্টিমিটার চওড়া আর ৪ সেন্টিমিটার মোটা হয়। প্রতিটি কিডনির ওজন ১৫০-১৭০ গ্রামের মধ্যে হয়। কিডনির দ্বারা প্রস্তুত মূত্র মূত্রাশয় পর্যন্ত মূত্রবাহিনী নালী দ্বারা পৌছায় মূত্রবাহিনী নালী সাধারণত ২৫ সেন্টিমিটার লম্বা হয় আর বিশেষ প্রকারের রাবার জাতীয় (Eastic) মাংসপেশী দ্বারা তৈরি হয়।
কিডনি মুত্রাশয় সংযোগ:
মুত্রাশয় পেটের নীচের অংশে সামনের দিকে (তলপেট) অবস্থিত একটি স্নায়বিক থলি, যার মধ্যে মূত্র জমা হয়। যখন মূত্রাশয়ে ৩০০-৪০০ মিলিলিটার (ml) মূত্র জমা হয় তখন মূত্ৰত্যাগের বেগ আসে। মূত্রনালিকা দ্বারা মূত্র শরীর থেকে বাইরে আসে।
কিডনিতে রক্তের পরিশোধনের পরে মূত্র কীভাবে সৃষ্টি হয়?
সারাদিনে কত মুত্র তৈরি হবে তা নির্ভর করে (১) কত পরিমাণ জলপান করি (২) শরীরে বের করা হয়। জলের মাত্রা (৩) শরীরে হরমোন ADH- এর মাত্রার উপর (৪) কিডনির সুস্থতার উপর। কিডনি যদি অসুস্থ হয় এবং GFR (Glomerular Filtration Rate) তখন মূত্র তৈরি করার ক্ষমতাও কমে।
কিডনি প্রয়োজনীয় বস্তুসমূহকে রেখে অপ্রয়োজনীয় পদার্থগুলিকে মূত্রদ্বার শরীরের বাইরে বের করে। এটি একটি অনন্য, অদ্ভূত তথা জটিল প্রক্রিয়া।
কিডনি রোগের লক্ষণ কি কি?
কিডনি সমস্যাখুব জটিল অবস্থা না হওয়া পর্যন্ত সাধারণত এর লক্ষণগুলো ভালোভাবে প্রকাশও পায় না। কিডনি রোগ খুব নীরবে শরীরের ক্ষতি করে। কিডনি রোগের কিছু প্রাথমিক লক্ষণ:
১) প্রস্রাবে পরিবর্তন : কিডনি রোগের একটি বড় লক্ষণ হলো প্রস্রাবে পরিবর্তন হওয়া। কিডনির সমস্যা হলে প্রস্রাব বেশি বা কম হয়। বিশেষত রাতে এই সমস্যা বাড়ে। প্রস্রাবের রং গাঢ় হয়। অনেক সময় প্রস্রাবের বেগ অনুভব হলেও প্রস্রাব হয় না।
২) প্রস্রাবের সময় ব্যথা : প্রস্রাবের সময় ব্যথা হওয়া কিডনির সমস্যার আরেকটি লক্ষণ। প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া এবং ব্যথা অনুভূত হয়৷
৩) প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া : প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া হলো অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি লক্ষণ ৷ এমন হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
৪) দেহে ফোলা ভাব : কিডনি শরীর থেকে বর্জ্য এবং বাড়তি পানি বের করে দেয়। কিডনিতে রোগ হলে এই বাড়তি পানি বের হতে সমস্যা হয়। বাড়তি পানি শরীরে ফোলাভাব তৈরি করে ৷ বিশেষ করে চোখের নিচ, মুখ কিংবা পা ফুলে যায়।
৫) মনোযোগ দিতে অসুবিধা হওয়া : লোহিত রক্তকণিকা কমে যাওয়ার কারণে মস্তিস্কে অক্সিজেন পরিবহন কমে যায়। এতে কাজে মনোযোগ দিতে অসুবিধা হয়।
৬) বিনা কারণে শরীর চুলকানো : কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়লে রক্তে বর্জ্য পদার্থ বাড়তে থাকে। ফলে এটি ত্বকে চুলকানি এবং র্যাশ তৈরি করতে পারে।
৭) বমি হওয়া বা বমি বমি ভাব : রক্তে বর্জ্য পদার্থ বেড়ে যাওয়ায় কিডনির রোগে বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার সমস্যা হতে পারে।
৮) শরীরের পেছনে ব্যথা : কিডনি রোগে শরীরে ব্যথা হয়। পিঠের পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয়।
৯) শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা : কিডনি রোগে ফুসফুসে তরল পদার্থ জমা হয়। এ ছাড়া কিডনি রোগে শরীরে রক্তশূন্যতাও দেখা দেয়। এসব কারণে শ্বাসের সমস্যা হয়, তাই অনেকে ছোট ছোট করে শ্বাস নেন।
১০) জ্বর আসা বা শীত অনুভূত হওয়া : কিডনি রোগ হলে গরম আবহাওয়ার মধ্যেও শীত শীত অনুভব হয়। আর কিডনিতে সংক্রমণ হলে জ্বরও আসতে পারে।
১১) ক্লান্ত লাগা এবং মাথা ঘোরা : যদি কিডনির সমস্যা হয় তাহলে কিডনি তার শরীর থেকে টক্সিন বের করে রক্ত পরিশোধন করতে পারে না। তখন সারাদিন ক্লান্ত লাগে, মাথা ঘোরা ভাব বেশি হয়।
১২) খাদ্যে অরুচি দেখা দেয়া : অনেক কারণেই খাদ্যে অরুচি হতে পারে। কিডনির সমস্যাও এর মধ্যে অন্যতম।কিডনি ঠিক মতো কাজ না করলে খাদ্যে অরুচি দেখা দেয় ৷
১৩) চোখের চারোদিকে ফোলা ভাব দেখা যায় : বেশকিছু কিডনি রোগের প্রধান লক্ষণ গুলোর মধ্যে চোখের চারপাশে ফুলে যাওয়া হল অন্যতম প্রধান লক্ষণ ।প্রসাবের সাথে প্রোটিন বের হয়ে গেলে সাধারণত এমন লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।
বেশকিছু কিডনি রোগের প্রধান লক্ষণ গুলোর মধ্যে চোখের চারপাশে ফুলে যাওয়া হল অন্যতম প্রধান লক্ষণ ।প্রসাবের সাথে প্রোটিন বের হয়ে গেলে সাধারণত এমন লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে। প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন বের হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে কিডনির ছাঁকনি ভালোভাবে কাজ না করা অর্থাৎ কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়া ।
১৪) অপর্যাপ্ত ঘুম ঘুমের সমস্যা হওয়া : অপর্যাপ্ত ঘুমের সমস্যা কিডনি রোগের লক্ষণ গুলোর মধ্যে একটি প্রধান লক্ষণ। কিডনি যখন ঠিকঠাকমতো ছাকনি দিয়ে বজ্র অপসারণ করতে না পারে, তখন রক্তের মধ্যে বর্জ্যের পরিমাণ বেশি হলে দেখা দিয়ে থাকে ঘুমের সমস্যা এ ছাড়াও অতিরিক্ত মোটা শরীরে ক্রনিক কিডনি রোগের লক্ষণ বেশি দেখা দিয়ে থাকে পাতলা মানুষের তুলনায় মোটা মানুষের মধ্যে স্লিপ এপ্নিয়া হওয়ার প্রবণতা থাকে।
স্লিপ এপ্নিয়া এক ধরনের ঘুমের সমস্যা মানুষের মধ্যে সাধারণত এই দুই ধরনের স্লিপ এপ্নিয়া দেখা দিয়ে থাকে একটি হচ্ছে অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ এপ্নিয়া এবং অন্যটি হচ্ছে সেন্ট্রাল স্লিপ এপ্নিয়া অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ এপ্নিয়াএকটি সাধারণ সমস্যা খুব বেশি জটিল নয় এ ধরনের স্লিপ এপ্নিয়ায় আক্রান্ত মানুষের ঘুমের মধ্যে শ্বাস প্রশ্বাস অল্প সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যায় ফলে রোগী নাক ডাকে।
সর্বশেষে একটাই কথা কিডনি রোগ হওয়া মানে ধীরে ধীরে আপনার দেহের সমস্ত অঙ্গ অকেজো হয়ে যাওয়া ৷ আর যা আপনি বুঝতেও পারবেন না যতদিন না পর্যন্ত এর লক্ষণ প্রকাশিত হয় ৷
সুস্থ স্বাভাবিক ব্যক্তির কি প্রস্রাবের মাত্রা বেশি/কম হতে পারে ?
হ্যা। প্রস্রাবের পরিমাণ জলপান এবং আবহাওয়ার তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। যদি কোনও ব্যক্তি কম জল পান করে তাহলে গাঢ় মূত্র ত্যাগ করে। সারাদিনে (৫০০ml) মূত্র দূষিত পদার্থ নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট। অধিক জল পান করলে অধিক এবং পাতলা মূত্র সৃষ্টি হয়। গ্রীষ্মকালে অত্যধিক ঘাম হবার জন্য প্রস্রাবের মাত্রা কমে যায়, আর শীতকালে ঘাম কম হবার জন্য প্রস্রাবের মাত্রা বেড়ে যায়।
কিডনি রোগ কি প্রতিরোধযোগ্য?
এই বিষয়ে প্রথম আলো পত্রিকা একটি গোল টেবিল আয়োজন করেছিলো। সেখানে বক্তারা বলেছেন “কিডনি রোগ প্রতিরোধযোগ্য, প্রয়োজন সচেতনতা”। বিশেষজ্ঞরা কিছু সুপারিশ দিয়েছিলেন যা নিচে তুলে ধরা হলো:
- চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক ও ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়া যাবে না
- বছরে একবার হলেও কিডনি পরীক্ষা করা দরকার
- ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি
- জনস্বাস্থ্য শক্তিশালী করার লক্ষে্য মশা-মাছি ধ্বংস করা ও ভেজাল খাদ্যবিরোধী অভিযান চালানো উচিত
- শিক্ষকদের মাধ্যমে স্কুলে কিডনি রোগ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা
- খোলা খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকা
- পরিমিত পানি ও সুষম খাবার গ্রহণ করা
- সচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যম ও কমিউনিটি ক্লিনিকগুলোকে কাজে লাগাতে হবে
- নিয়মিত কায়িক শ্রমের অভ্যাস করা বা ব্যায়াম করা
প্রথম আলো আয়োজিত উক্ত অনুষ্ঠানে কিডনি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম এ সামাদ বলেন :
প্রচণ্ড বমিভাব, ক্ষুধামান্দ্য, চোখ-মুখ ফুলে যাওয়া, শরীর চুলকানো, প্রস্রাব কমে যাওয়া, শ্বাসকষ্ট, উচ্চ রক্তচাপ ইত্যাদি উপসর্গ কিডনি বিকলের প্রাথমিক লক্ষণ।
কিডনি দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল, ‘কিডনি রোগ ব্যাপক ও মারাত্মক কিন্তু প্রতিরোধযোগ্য’। কিডনি রোগ অনেকটা সমুদ্রে ভাসমান বরফখণ্ডের মতো। এর সামান্য অংশ পানির উপরিভাগে দৃশ্যমান থাকে। আর বেশির ভাগই পানির নিচে অদৃশ্য থাকে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের, দুই কোটির বেশি মানুষ কিডনি রোগে আক্রান্ত। দেশে ঘণ্টায় পাঁচজনের বেশি মানুষ মৃত্যুবরণ করে কিডনি বিকল হয়ে।
শরীরের বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়ার ক্ষেত্রে কিডনি অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে কাজ করে। রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, পানির ভারসাম্য রক্ষা, লোহিত রক্তকণিকা তৈরির জন্য হরমোন উৎপাদন, অস্থিমজ্জাকে শক্ত রাখা ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কাজ কিডনি করে থাকে।
কিডনি বিকল হওয়ার উপসর্গ সাধারণত ৭০ থেকে ৮০ ভাগ কিডনির কর্মক্ষমতা নষ্ট হওয়ার আগে বোঝা যায় না। কিছু লক্ষণ কিডনি রোগের সংকেত বহন করে। যেমন প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন প্রস্রাব, প্রস্রাব লাল হওয়া, প্রস্রাবে দুর্গন্ধ, কোমরের দুই পাশে ও তলপেটে প্রচণ্ড ব্যথা, শরীর-মুখ ফোলা ইত্যাদি।
তিন মাসের চিকিৎসায় কিডনি রোগ ভালো না হলে এটিকে দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগ হিসেবে ধরা হয়। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও নেফ্রাইটিস (কিডনির বিভিন্ন সমস্যা)—এই তিন রোগের কারণে ৮০ ভাগ লোকের কিডনি নষ্ট হয়। এই রোগের চিকিৎসা অত্যন্ত ব্যয়বহুল। তবে একটু সচেতন হলে ৫০ থেকে ৬০ ভাগ ক্ষেত্রে কিডনি বিকল প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশ্ব কিডনি দিবসে দেওয়া নির্দেশনা অনুযায়ী স্কুলপর্যায় থেকে শিশুদের কয়েকটি নিয়ম মেনে চলার অভ্যাস করা গেলে কিডনি রোগ ছাড়াও অন্যান্য অসংক্রামক রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। ওজন, রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। খাবার পরিমিত ও সুষম হতে হবে। দিনে পরিমিত পানি পান করতে হবে।
ধূমপান ও মাদকদ্রব্য থেকে বিরত থাকা জরুরি। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া বেদনানাশক বা অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা যাবে না। পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে প্রস্রাব ও রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করাতে হবে।
এই আর্টিকেলটি নিয়মিত আপডেট করা হবে.. লক্ষ্য রাখুন।
আরও পড়ুন:
- মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ৬ আসামীর মৃত্যুদন্ড
- আইএমএফর কাছে বেলআউট ফান্ড চায়নি বাংলাদেশ সরকার
- রাষ্ট্রীয় সম্পদ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার আহবান সেতুমন্ত্রীর
- নৌ ও বিমান বাহিনীর কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে হবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী, পেশাগত দক্ষতা, নেতৃত্বের গুণাবলীর ভিত্তিতে : প্রধানমন্ত্রী
- সরকার তরুণদের দক্ষ কর্মশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে : প্রধানমন্ত্রী
- শিশুদের কিডনি রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- অনলাইন জন্ম নিবন্ধন বিষয়ে সব তথ্য
- ভিটামিন সি জাতীয় খাবার
- কিডনি রোগীর খাবার
- প্রোটিন জাতীয় খাবার । আমিষ খাবার