মহিউদ্দীন খান আলমগীর। বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ

ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর (জন্মঃ ১৯৪২) বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ, লেখক, সাবেক সরকারি কর্মকর্তা ও মন্ত্রী। তিনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপালন করেছিলেন।

মহিউদ্দীন খান আলমগীর। বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ

 

মহিউদ্দীন খান আলমগীর। বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ

 

জন্ম ও শিক্ষাজীবন

মহিউদ্দীন খান আলমগীর চাঁদপুর জেলার কচুয়া উপজেলার গুলবাহার গ্রামে ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উন্নয়ন অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন এবং বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টরেট ডিগ্রী লাভ করেন।

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

কর্মজীবন

১৯৬২ থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা করেন মহিউদ্দীন খান আলমগীর। সেই বছরই পাকিস্তানের সরকারের সরকারি কর্মকর্তা পদে যোগদান করেন এবং প্রায় ৩২ বছর সরকারের বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানের উপবিভাগীয় কর্মকর্তা (সিএসপি ডিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭১ সালের যুদ্ধের পর বাংলাদেশের স্বাধীন কর্ম কমিশন গঠিত হয় এবং মহিউদ্দীনকে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি ১৯৭৬ থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত যশোরের জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি বর্তমানে চাঁদপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য। তিনি ১৩ই সেপ্টেম্বর ২০১২ বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পেয়েছিলেন। বর্তমানে সরকারি হিসাব-সংক্রান্ত সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান ও ফারমার্স ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান । এছাড়াও, তিনি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বও পালন করেন। তাকে, পার্বত্য শান্তি চুক্তি ও গঙ্গা পানি চুক্তির রূপকারও বলা হয়।

 

মহিউদ্দীন খান আলমগীর। বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ

 

সমালোচনা

২০১৩ সালে সাভারে নয় তালা ভবন ধ্বসের পর বিবিসিকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, বিরোধী দলের (বিএনপি) কর্মীরা হরতালের সময় ঐ ভবনের পিলার ধরে নাড়াচাড়া করে, যা ঐ ভবন ধ্বসের একটি কারণ হতে পারে । তার এই বক্তব্য জনসাধারনের মাঝে ব্যাপক সমালোচিত হয়। মুক্তিযোদ্ধা কাদের সিদ্দিকী মহিউদ্দীনকে পাকিস্তানি দোসর বলে অভিযুক্ত করেন কারণ তিনি ১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধের সময়ে পাকিস্তান সরকারের অধীনে এসডিও পদে কর্মরত ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে বিরোধী দলের উপর অত্যচারে পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহারের অভিযোগে মহিউদ্দিনের সমালোচনা করা হয়।

এছাড়া পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করে আন্দোলনে অংশ নেয়া জামাত-শিবিরের কর্মীকে হত্যার অভিযোগেও তিনি ব্যাপকভাবে সমালোচিত হন। এই আন্দোলনটি ছিল যুদ্ধাপরাধের দায়ে দণ্ডিত তাদের নেতার মুক্তির দাবীতে। তিনি তার নিজের প্রতিষ্ঠিত ফারমার্স ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাবস্থায় গ্রাহকের ঋণের ভাগ নিয়েছেন যা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিশেষ তদন্তে বেরিয়ে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুসন্ধানে আরো উঠে আসে কিভাবে ফারমার্স ব্যাংক কার্যক্রম শুরুর পরই অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে। যার ফলে ব্যাংকটিতে নগদ অর্থের চরম সংকট দেখা দেয়। এক পর্যায়ে সংকটে পড়ে ব্যাংকটি গ্রাহকের টাকা ফেরত দিতে অপারগ হয়। পরিস্থিতির চরম অবনতি হওয়ায় ২০১৭ সালের নভেম্বরে পদ ছাড়তে বাধ্য হন ব্যাংকটির চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর।

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment