নুরুল ইসলাম নাহিদ (জন্ম: ৫ জুলাই ১৯৪৫) বাংলাদেশের রাজনীতিবিদ যিনি বাংলাদেশের সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও সিলেট-৬ আসনের সংসদ সদস্য।
Table of Contents
নুরুল ইসলাম নাহিদ । বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ
প্রারম্ভিক জীবন
নুরুল ইসলাম নাহিদ ৫ জুলাই ১৯৪৫ সালে সিলেট জেলার বিয়ানীবাজারের দক্ষিণ নয়াগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মােঃ আকদ্দস আলী ও মাতার নাম জয়তুরা খাতুন। তিনি কসবা প্রাথমিক বিদ্যালয়, বিয়ানীবাজার পঞ্চখন্ড হরগোবিন্দ হাইস্কুল, সিলেট এমসি কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করেছেন।
তার স্ত্রী জোহরা জেসমিন সরকারি কর্মকর্তা ছিলেন। এই দম্পতীর দুই মেয়ে, নাদিয়া নন্দিতা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক ও নাজিয়া সামানথা ইসলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী।
রাজনৈতিক জীবন
নাহিদের রাজনৈতিক জীবনের সূচনা ঘটে ষাটের দশকের শুরুতে আইয়ুব খানের সামরিক শাসন বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় কর্মী হিসেবে। তিনি ৬ দফা ও ১১ দফার ভিত্তিতে ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান সহ ঐ সময়কালের সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকা
মুক্তিযুদ্ধের সময় সংগঠক ও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে তৎকালীন ছাত্র সংগঠন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি হিসেবে গেরিলা বাহিনী সংগঠিত করার ক্ষেত্রে তার ছিল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। ‘ঘাতক দালাল নির্মূল জাতীয় সমন্বয় কমিটি’ এর স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য তিনি।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি
তিনি ১৯৭০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়াও এই ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৩ সালে তিনি বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ সালে তিনি সিপিবি’র সাধারণ সম্পাদক হয়েছিলেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
১৯৯৪ সালে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের শিক্ষা ও মানবসম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক। ১২ জুন ১৯৯৬ সালের ৭ম, ২০০৮ সালের ৯ম, ২০১৪ সালে দশম ও ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলা (সিলেট-৬) থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ৬ জানুয়ারি ২০০৯ সালে বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ৬ জানুয়ারি ২০১৯ তারিখ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।
সমালোচনা
২০১৩ এবং ২০১৪ সালে বাংলাদেশে মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিকসহ বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার ঘটনা ঘটে। এসকল ঘটনায় শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে নাহিদ সারাদেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখোমুখি হন। নাহিদ পরবর্তীকালে প্রশ্নপত্র ফাঁসে জড়িতদের শাস্তির বিষয়ে যে বিদ্যমান আইন রয়েছে তা আরো সংশোধনের জন্য ব্যবস্থা নেবেন বলে জানান। ২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর এক সরকারি অনুষ্ঠানে নিজের ও মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের দুর্নীতির স্বীকারোক্তি করে নাহিদ বলেন, “আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা ঘুষ খাবেন, তবে সহনশীল হইয়া খাবেন। অসহনীয় হয়ে বলা যায় আপনারা ঘুষ খাইয়েন না, এটা অবাস্তবিক কথা হবে। নানা জায়গায় এ রকম হইছে, সব জায়গাতেই এ রকম হইছে। খালি যে অফিসার চোর, তা না, মন্ত্রীরাও চোর, আমিও চোর। এই জগতে এ রকমই চলে আসতেছে।
আরও দেখুনঃ