নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (জন্ম: ১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৭ – মৃত্যু: ৩ মে ২০১৫) একজন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি ঢাকা-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন।
Table of Contents
নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু । বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ
কর্মজীবন
পিন্টু নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ঢাকা ইউনিটের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি ২০০১ সালে ঢাকা-৮ ( লালবাগ) থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ২০০৩ সালে, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সরকার তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রত্যাহার করতে ক্লান্ত হলেও বিচারক তাকে অস্বীকার করেছিলেন।
২০০৯ সালে বাংলাদেশ বিডিআর বিদ্রোহের সাথে জড়িত থাকার দায়ে পিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তিনি বিদ্রোহীদের পরিবহন সরবরাহ করে সহায়তা করেছিলেন বলে আদালতে উল্লেখ করা হয়। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার চেষ্টা করেছিলেন। তার দোষী সাব্যস্ত হওয়ার বিষয়ে পর্যাপ্ত তথ্য মনোনয়পত্রের সাথে সরবরাহ করতে না পারায় বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন তার মনোনয়ন বাতিল করে দেয়।
ব্যক্তিগত জীবন
পিন্টুর বিয়ে হয়েছিল নাসিমা আক্তার কল্পনার সাথে। তাকে ২০১৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের একজন নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছিল।
মৃত্যু
পিন্টু কারাগারে থাকাকালীন ৩ মে ২০১৫ তারিখে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা ভুগছিলেন। সেখানে তিনি অসুস্থ হলে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। পিন্টুর পরিবার এটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড হিসেবে আখ্যা দেয়।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) বাংলাদেশের একটি অন্যতম প্রধান রাজনৈতিক দল। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দল প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৭৭ সালে ৩০ এপ্রিল জিয়াউর রহমান তার শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্যে ১৯ দফা কর্মসূচি শুরু করেন। জিয়া যখন সিদ্ধান্ত নিলেন যে তিনি রাষ্ট্রপতির পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার।
ইতিহাস
প্রতিষ্ঠা
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জাতীয় সংসদ নির্বাচন এগিয়ে আসলে জিয়া বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল গঠন করেন। জাগদলকে বিএনপির সাথে একীভূত করা হয়। রাষ্ট্রপতি জিয়া এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন এবং এই দলের প্রথম চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। অধ্যাপক একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী এর প্রথম মহাসচিব ছিলেন।

জিয়ার এই দলে বাম, ডান, মধ্যপন্থি সকল প্রকার লোক ছিলেন। বিএনপির সবচেয়ে প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল এর নিয়োগ পদ্ধতি। প্রায় ৪৫ শতাংশ সদস্য শুধুমাত্র রাজনীতিতে যে নতুন ছিলেন তাই নয়, তারা ছিলেন তরুণ। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টায় রমনা রেস্তোরাঁয় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিক ঘোষণাপত্র পাঠের মাধ্যমে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের যাত্রা শুরু করেন।
জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে তিনি ঘোষণাপত্র পাঠ ছাড়াও প্রায় দুই ঘণ্টা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। সংবাদ সম্মেলনে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে তিনি প্রথমে ১৮ জন সদস্যের নাম এবং ১৯ সেপ্টেম্বর ওই ১৮ জনসহ ৭৬ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। এখানে উল্লেখ্য, বিএনপি গঠন করার আগে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) নামে আরেকটি দল তৎকালীন উপ-রাষ্ট্রপতি বিচারপতি আবদুস সাত্তারকে সভাপতি করে গঠিত হয়েছিল। ২৮ আগস্ট ১৯৭৮ সালে নতুন দল গঠন করার লক্ষ্যে জাগদলের বর্ধিত সভায় ওই দলটি বিলুপ্ত ঘোষণার মাধ্যমে দলের এবং এর অঙ্গ সংগঠনের সকল সদস্য জিয়াউর রহমান ঘোষিত নতুন দলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও দেখুনঃ