পোকার আক্রমণে দিশেহারা আমন ধান চাষিরা

জেলার বাঘারপাড়া উপজেলার বিস্তীর্ণ ধান ক্ষেতে ব্যাপক হারে মাজরা পোকা, পাতা মোড়ানো ও পচা রোগের আক্রমনে  দিশেহারা কৃষকরা । পোকার আক্রমণে কালচে রঙ ধারণ করছে ধানের শীষগুলো। ক্ষেতে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করেও কোনো সুফল পাওয়া যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষক। পোকার আক্রমণে দিনদিন পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে। এতে ধানের ফলন নিয়ে চিন্তিত কৃষকরা।

স্থানীয় কৃষকরা জানান, কিছু কিছু ক্ষেতের ধানে শীষ বের হলেও বেশিরভাগ ক্ষেতের ধান গাছে  আর কয়েকদিন পরে শীষ আসার কথা। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পোকার আক্রমণ। ধানগাছ  শুকিয়ে সাদা ও বাদামি রং ধারণ করছে। কীটনাশক ছিটিয়েও কোনো ফল পাচ্ছেন না তারা। ফসলের মাঠজুড়ে এখন শুধু পোকা আর পোকা।

পোকার আক্রমণে দিশেহারা আমন ধান চাষিরা

পোকার হাত থেকে ফসল রক্ষায় বাজারে পাওয়া কীটনাশক জমিতে ছিটিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। এতে রোপা আমনের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা।তাদের আশঙ্কা,সময় মতো পোকা দমন করতে না পারলে এবার রোপা আমন উৎপাদন ব্যাহত হবে ।সরেজমিনে ঘুরে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

সরেজমিনে উপজেলার খয়রার বিল,বড়বিল , সনাকুড়, ভোগের বিল,বিলজলেশ্বরসহ বিভিন্ন এলাকার আমন ধানে পোকার আক্রমণের এমনই চিত্র দেখা গেছে ।

পোকার আক্রমণে দিশেহারা আমন ধান চাষিরা

খানপুর গ্রামের কৃষক সত্য বিশ্বাস জানান, তার প্রায় দুই বিঘা জমিতে পোকা আক্রমণ করেছে। এ পর্যন্ত তিনি তিনবার কীটনাশক ভিরতাকো স্প্রে করেও এই পোকা দমন করতে পারছেন না। একই কথা জানান কৃষক শঙ্কর বিশ্বাস, নিমাই মন্ডল। কৃষক শঙ্কর বিশ্বাস জানান, তিন তার দুই বিঘা জমিতে এ যাবত  তিনবার কীটনাশক স্প্রে করা হয়েছে। প্রতিবার স্প্রে করতে বিঘা প্রতি প্রায় সাত-আটশ’ টাকা করে খরচ হচ্ছে।

কিন্তু পোকার  আক্রমণ থেকে ফসল রক্ষ্যা করা যাচ্ছে না। কৃষক নিমাই মন্ডল বলেন , তিনি এবার তিন বিঘা জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন। তিনিও এপর্যন্ত জমিতে তিন বার কিটনাশক স্প্রে করেছেন।

কিন্তু কৃষকের চরম বিপর্যয়ের সময়ও পাশে পাচ্ছেন না কৃষিবিভাগের মাঠকর্মীদের বলে অভিযোগ করেন চাষিরা। 

 

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

 

খানপুর বাজারের সার- কীটনাশক বিক্রেতা অশোক বিশ্বাস জানান, তিনি কৃষকদের সিনজেন্টা কোম্পানীর ভিরতাকো,এ্যামিশটারটপ,ক্যারাটে সহ অন্যান্য কোম্পানির কারটাপ,রেটকার্ড ইত্যাদি কীটনাশক দিয়েছি।কোম্পানির প্রতিনিধিদের পরামর্শে তিন এসব কীটনাশক দিয়ে থাকেন,তবে কোন কৃষিকর্মকর্তা আমার এখানে এ বিষয়ে কিছু জানাননি।
 
জানতে চাইলে উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা সৈয়দা নাসরিন জাহান জানান, এধররনের কোন খবর তিনি পান নাই। তবে এসময় কিছু প্রজাপতির মতো পোকার  আক্রমন হয়ে থাকে । তিনি এবিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি। মাঠকর্মীদের মাঠে না যাওয়া নিয়ে কৃষকদের অভিযোগ সম্পর্কে তিনি বলেন,মাঠকর্মীরা একেবারে মাঠে যাননা এ অভিযোগ পুরোপুরি সঠিক না। তবে আমি নতুন এসেছি বিষয়গুলি দেখবো। 

 

পোকার আক্রমণে দিশেহারা আমন ধান চাষিরা

 

তিনি জানান, এবছর উপজেলায় ১৬ হাজার ৭ শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি চাষ করা হয়েছে। ১৬ হাজার ৭ শ’ ৮০ হেক্টর  জমিতে আমন ধান চাষের চাষ করা হয়েছে। উল্লেখ্য গত বছর আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৬ হাজার ৪ শ’ ৪০ হেক্টর ।

আরও দেখুনঃ

 

Leave a Comment