শাজাহান খান (জন্ম: ১ জানুয়ারি ১৯৫২) হলেন বাংলাদেশের একজন রাজনীতিবিদ এবং জাতীয় সংসদের সদস্য। তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভাপতি মন্ডলীর সদস্য এবং সাবেক মন্ত্রী।
Table of Contents
শাজাহান খান । বাংলাদেশি রাজনীতিবিদ
শিক্ষা ও প্রারম্ভিক জীবন
শাজাহান খান ১৯৫২ সালের ১লা জানুয়ারি মাদারীপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম অ্যাডভোকেট মৌলভী আচমত আলী খান এবং মাতা তজন নেসা বেগম। তার পিতা আচমত ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজকর্মী এবং জাতীয় সংসদের সদস্য।
খান, ১৯৫৭ সালে মাদারীপুরের নুতন শহর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন এবং ১৯৬৬ সালে মাদারীপুরের ইউনাইটেড ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষা পাশ করেন। ১৯৬৮ সালে মাদারীপুর নাজিমউদ্দিন কলেজ (বর্তমান মাদারীপুর সরকারি কলেজ) থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সরকারি নাজিমউদ্দিন কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করেন।

রাজনৈতিক জীবন
শাজাহান খান, ১৯৬৪ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে যোগদান করার মাধ্যমে ছাত্র রাজনীতি শুরু করেন। ছাত্র রাজনীতিতে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। তিনি ১৯৬৬-৬৭ এবং ১৯৬৭-৬৮ সালে মাদারীপুর উপবিভাগের ছাত্রলীগের নির্বাচিত সেক্রেটারি ছিলেন। এছাড়া তিনি নাজিমউদ্দিন কলেজের সাধারণ সম্পাদক এবং সহ-সভাপতি ছিলেন।
শাজাহান খান একজন মুক্তিযোদ্ধা, তিনি ১৯৭১ সালে যুদ্ধের সময় প্রথমে মুক্তিবাহিনী এবং পরে মুজিব বাহিনীর সদস্য ছিলেন। তিনি ভারতের দেরাদূনে মিলিটারি ট্রেনিং নেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর (প্রেসিডিয়াম) সদস্য এবং বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি।
খান সর্বপ্রথম ১৯৮৬ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মাদারীপুর-২ আসন থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। একই আসন থেকে পরবর্তীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনয়নে তিনি ১৯৯১, ১৯৯৬, ২০০১, ২০০৮, ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের নির্বাচনে সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হন।
৩১শে জুলাই, ২০০৯ সালে নৌপরিবহন মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। নভেম্বর ২০১৩-তে, অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রিসভায় তাকে নৌপরিবহন এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। জানুয়ারি ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি শুধুমাত্র নৌপরিবহন মন্ত্রীর কার্যভার গ্রহণ করেন।
সমালোচনা
শাজাহান খান বিভিন্ন সময়ে তার বক্তব্য ও অবস্থানের কারণে সমালোচনার মুখমুখি হয়েছেন। যদিও বিতর্কের মুখে তা প্রত্যাহার করেন । এছাড়া ২০১৬ সালে পরিবহন খাতে অনিয়মের জন্য তাকে অভিযুক্ত করে তার অপসারণ দাবি করা হয়েছিল।
২০১৮ সালের জুলাইয়ে ঢাকায় সড়ক দূর্ঘটনায় দুজন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর মন্ত্রীর করা মন্তব্য সমালোচিত হয় এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে শিক্ষার্থীরা শাজাহান খানের বিরুদ্ধে এবং সড়কে নৈরাজ্য দূরীকরণের জন্য বিক্ষোভ শুরু করে। এছাড়াও সড়ক দূর্ঘটনার পর বিভিন্ন সময় তার দোষী চালক ও পরিবহন শ্রমিকদের পক্ষে নমনীয় থাকার অভিযোগেও তাকে অনেকে অভিযুক্ত করে থাকেন। নৌমন্ত্রীর এহেন আচরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে আরো সংযত হয়ে কথা বলতে নির্দেশ দেন।
ব্যক্তিগত জীবন
খান ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত এবং তার দুই ছেলে এবং একজন কন্যাসন্তান রয়েছে। তার সহধর্মিণী, সৈয়দা রোকেয়া বেগম, একজন কলেজ প্রভাষক। তার জ্যেষ্ঠপুত্র, আসিব খান, আওয়ামী যুবলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য, এবং তার একমাত্র মেয়ে, ঐশী খান, টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য (এমপি) তানভীর হাসান ছোট মনির সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
আরও দেখুন: