সরকারি ঋণের ফলে মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনা নেই : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

সরকারি ঋণের ফলে মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনা নেই : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার আজ আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে নির্ধারিত ব্যাংক ঋণসহ সরকারি ঋণের লক্ষ্যমাত্রা থেকে দেশে মূল্যস্ফীতি সৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশে মূল্যস্ফীতি সরবরাহের দিক থেকে নয়, বরং এটি সম্পূর্ণভাবে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতি।’ রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র্রে (বিআইসিসি) আয়োজিত বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এ কথা বলেন।

অর্থ বছর ২৪-এর জন্য মোট ৭,৬১,৭৮৫ কোটি টাকার বাজেটের মধ্যে বাজেট ঘাটতি ধরা হয়েছে ২,৬১,৭৮৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে ১,৩২,৩৯৫ কোটি টাকা আসবে ব্যাংকিং খাত থেকে।রউফ বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক নগদ নোট ছাপানোর মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবে না এবং এমন কোনো সম্ভাবনা নেই।তিনি জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংক ১৮ জুন মুদ্রানীতি প্রকাশ করবে। সেখানে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ থাকবে।

সরকারি ঋণের ফলে মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনা নেই : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

গভর্নর বলেন, মূল্যস্ফীতি যাতে নিয়ন্ত্রণে থাকে সেজন্য বাজেটে সরবরাহের দিকে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।তিনি বলেন, সুদ ও ভর্তুকি পরিশোধে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হলেও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কোনো প্রভাব পড়বে না। এছাড়া এডিপি কাজে লাগানোর ক্ষেত্রে তেমন কোনো কঠোরতা থাকবে না।তিনি বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার বর্তমান রিজার্ভ দিয়ে আরও পাঁচ মাসের আমদানি বিল মেটানো সম্ভব হবে।

google news
গুগোল নিউজে আমাদের ফলো করুন

 

তিনি আরো বলেন, “এখন আমাদের প্রধান কাজ আর্থিক পরিস্থিতি ইতিবাচক করা। আমরা আশা করি কয়েক মাসের মধ্যে এটি একটি স্থিতিশীল অবস্থায় আসবে। তারপর ধীরে ধীরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়বে।”আর্থিক খাতের উন্নয়নে বাজেটে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে রউফ বলেন, সংশোধিত ব্যাংক কোম্পানি আইনের খসড়া ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভায় অনুমোদন পেয়েছে এবং জাতীয় সংসদে পেশ করা হবে। সুরক্ষিত লেনদেন আইনের খসড়াও জাতীয় সংসদে যাবে। এছাড়া ইনসলভেন্সি আইনের  খসড়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

 

সরকারি ঋণের ফলে মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনা নেই : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর বলেন, বেসরকারি ব্যাংকে এনপিএল প্রবণতা ৫ শতাংশে এবং সরকারি ব্যাংকে ১০ শতাংশের মধ্যে নামিয়ে আনার চেষ্টা চলছে।তিনি বলেন, “আমরা ইতিমধ্যে কিছু সমস্যাযুক্ত ব্যাঙ্ক চিহ্নিত করেছি এবং এইভাবে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছি। যাই হোক না কেন পর্যায়ক্রমে সমাধান করা হবে।”

স্টক মার্কেটের উন্নতির জন্য ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে গভর্নর বলেন, গত এক বছরে প্রায় ৩ থেকে ৪টি প্রধান নীতিগত সমস্যা সমাধান করা হয়েছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নীতি সহায়তা বাড়িয়েছে।তিনি বলেন, বন্ড বাজারের বিকাশের এখনই উপযুক্ত সময়। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ বিষয়ে বিএসইসিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিচ্ছে।

 

সরকারি ঋণের ফলে মূল্যস্ফীতির সম্ভাবনা নেই : বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর

 

 

২০২৭ সালের মধ্যে ৭৫ শতাংশ ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলার জন্য সরকারের লক্ষ্য অর্জনের সম্ভাবনা সম্পর্কে অন্য প্রশ্নের জবাবে, রউফ বলেন, এই বিষয়ে কিছু পাইলট স্কিম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ইউনিক কিউআর কোড এবং জাতীয় ডেবিট কার্ডের পাশাপাশি ইন্টারঅপারেবল প্ল্যাটফর্মও তৈরি করা হচ্ছে।
গভর্নর বলেন, দেশে ডিজিটাল ব্যাংকের উদ্যোগ সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল হবে এবং এটি একটি ডিজিটাল সমাজ প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে। দেশের প্রায় ছয় কোটি মানুষ এখন স্মার্ট ফোন ব্যবহার করে।তিনি বলেন, “ডিজিটাল ব্যাংক প্রতিষ্ঠিত হলে, এটি লেনদেনের গতি বাড়াবে এবং ২০২৭ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।”

আরও দেখুনঃ

Leave a Comment