ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দিতে সক্রিয় বিবেচনায় অস্ট্রেলিয়া, দ্রুত আসতে পারে ঘোষণা

ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডার পর এবার ফিলিস্তিনকে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি সক্রিয়ভাবে বিবেচনা করছে অস্ট্রেলিয়া। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠেয় জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের আগেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত আসতে পারে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানিজ।

৭ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ বলেন,

“ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া একটি সার্বভৌম সিদ্ধান্ত, এতে অন্য কোনও দেশের অনুমতির প্রয়োজন নেই।”

তিনি আরও জানান, এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া কেবল নিজেদের জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতা বিবেচনায় নেবে।

আন্তর্জাতিক চাপ পূর্বসূরিদের পদক্ষেপ

সম্প্রতি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য ও কানাডা ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা ঘোষণা করলে আন্তর্জাতিক মহলে অস্ট্রেলিয়ার উপর একই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য চাপ বাড়তে শুরু করে।

এই প্রেক্ষাপটে অস্ট্রেলিয়া বিষয়টি সক্রিয় আলোচনায় এনেছে, যদিও সরকার জানিয়ে দিয়েছে—এই স্বীকৃতি নিঃশর্ত হবে না।

শর্তসাপেক্ষ স্বীকৃতি: অস্ট্রেলিয়ার অবস্থান

অস্ট্রেলীয় সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত বিবেচনায় নেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে:

শর্তাবলিব্যাখ্যা
ইসরায়েলের নিরাপত্তা নিশ্চয়তাফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের ফলে ইসরায়েলের নিরাপত্তা যেন হুমকির মুখে না পড়ে
হামাসের গাজা নিয়ন্ত্রণ ত্যাগগাজা উপত্যকা যেন উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে না থাকে
ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কারপ্রশাসনিক ও সাংবিধানিক কাঠামোয় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনা

 

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, এই বিষয়গুলো নিয়ে ইতোমধ্যে আলবানিজ আলোচনায় বসেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমার এবং ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে।

বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট

বর্তমানে বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশ ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে চীন ও রাশিয়া এই স্বীকৃতি ইতোমধ্যে দিয়েছে।

যদি ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়, তবে যুক্তরাষ্ট্রই হবে একমাত্র বৃহৎ পশ্চিমা শক্তি, যারা এখনও ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি।

এই প্রসঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হতে পারে।