দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ ইন্দোনেশিয়ায় শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) ভোরে ইন্দোনেশিয়ার বালি সাগরসহ উপকূলীয় বালি ও লম্বক অঞ্চলে এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। ইন্দোনেশিয়া ও মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থা জানিয়েছে রিখটার স্কেলে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৭.১। তবে ইউরোপিয়ান-মেডিটেরিনিয়ান সিমোলজিক্যাল সেন্টারের (ইএমএসসি) এর মাত্রা ছিল ৭.০।
শক্তিশালী এই ভূমিকম্পের পর সেখানকার বাসিন্দারা আতঙ্কে বাড়িঘর ছেড়ে বাইরে বেরিয়ে আসেন। ইএমএসসি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ইন্দোনেশিয়ার মাতারাম থেকে ২০৩ কিলোমিটার (১২৬ মাইল) উত্তরে এবং ভূপৃষ্ঠের ৫১৬ কিলোমিটার গভীরে।
ইন্দোনেশিয়ার বালি-লম্বকে ৭.১ মাত্রার ভূমিকম্প
ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক সংস্থা অনুসারে, বালি এবং লম্বকের উপকূলীয় অঞ্ অঞ্চলে ভূমিকম্প আঘাত হানান পরে ৬.১ এবং ৬.৫ মাত্রার আরও দুটি আফটারশক অনুভূত হয়। এই ঘটনায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি এবং কোন সুনামির সতর্কতা জারি করা হয়নি।ইন্দোনেশিয়ার দুর্যোগ সংস্থা বিএনপিবি’র মুখপাত্র আব্দুল মুহারী বলেন, ভূমিকম্পটি ভূপৃষ্ঠের অনেক গভীরে আঘাত হানায় সম্ভবত এ ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতির ঘটনা ঘটেনি।
উল্লেখ্য, এশিয়ার বৃহত্তম দ্বীপদেশ ইন্দোনেশিয়ার জন্যসংখ্যা সাড়ে ২৭ কোটির বেশি। ভূতাত্ত্বিক অবস্থার কারণে নিয়মিতই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে ভূমিকম্প, অগ্নুৎপাত ও সুনামির মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঘটনা ঘটে থাকে। এর আগে গত বছরের ২১ নভেম্বর ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিম জাভা প্রদেশে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ৩১০ জন প্রাণ হারায়।

এছাড়া ২০০৯ সালে পাদাংয়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এক হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হন আরও অনেকে। এছাড়া ভূমিকম্পে বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনাও ধ্বংস হয়ে যায়। তারও আগে ২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পরপর আঘাত হানে সুনামি। তখন ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।
মূলত প্রশান্ত মহাসাগরের তথাকথিত ‘রিং অব ফায়ারে’ ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা দেখা যায়। এখানে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ঘটে। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব দেশই এ কারণে ভূমিকম্পের অত্যধিক ঝুঁকিতে আছে।